রাশিয়ার সাথে সম্পাদিত চুক্তির অধীনে এই প্রথম একটি শস্যবাহী জাহাজ ইউক্রেনের ওডেসা বন্দর ছেড়ে রওনা দিয়েছে।
এ বছর ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই রাশিয়া ইউক্রেনের বন্দরগুলো অবরোধ করে রেখেছিল। তবে সম্প্রতি জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দু’দেশ জাহাজ চলাচল আবার শুরু করার ব্যাপারে মতৈক্যে পৌঁছায়।
তুরস্ক ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, স্থানীয় সময় সোমবার সকালে ‘রাজোনি’ নামের সিয়েরা লিওনের পতাকাবাহী জাহাজটি ওডেসা থেকে লেবাননের ত্রিপোলি বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।
সাগরের একটি নিরাপদ করিডোর দিয়ে জাহাজটি চলবে – যা জাতিসংঘ এবং তুরস্ক আলোচনার মাধ্যমে স্থির করেছে।
আগামী কয়েক সপ্তাহে আরো কিছু জাহাজ যাত্রা করবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব আশা প্রকাশ করেছেন যে এর ফলে পৃথিবীব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে স্বস্তি ফিরে আসবে এবং শস্যের দাম কমে আসবে ।
রাশিয়া-ইউক্রেন চুক্তির অধীনে ইস্তাম্বুলে যে যৌথ সমন্বয় কমিটি গঠিত হয়েছে তারা জানিয়েছে জাহাজটি ২৬ হাজার টন শস্য বহন করছে এবং মঙ্গলবার এটির তুরস্কের সমুদ্রসীমায় পৌঁছানোর কথা।
কৃষ্ণসাগরে অবরোধ আরোপের কারণেই যে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে – এমন অভিযোগ রাশিয়া অস্বীকার করছে।
শস্যবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ার খবরকে রাশিয়াও স্বাগত জানিয়েছে এবং ইউক্রেন চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলবে বলে আশা প্রকাশ করেছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইউক্রেন থেকে খাদ্যবাহী কোনো জাহাজে রাশিয়া আক্রমণ করবে না, তবে এসব জাহাজে করে ইউক্রেন যেন অস্ত্র আনা-নেওয়া করতে পারে তা নিশ্চিত করবে তুরস্ক।
গত ২২শে জুলাই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে নিরাপদে শস্য রপ্তানির সুযোগ তৈরি করার লক্ষ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় – যাতে জাতিসংঘ এবং তুরস্কও সই করে।
তবে চুক্তিটি সই হওয়ার পরদিনই ওডেসা বন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। এরপর এ সমঝোতার ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় ধরনের সংশয় দেখা দিয়েছিল।
ইউক্রেনের সরকার বলছে, ওডেসা ও তার আশপাশের বন্দরগুলোয় আরো ১৬টি জাহাজ ৬০০,০০০ টন খাদ্য নিয়ে অপেক্ষা করছে।
কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ওডেসা বন্দরের গুদামেই দুই কোটি টনের মত খাদ্যশস্য মজুদ রপ্তানির অপেক্ষায় পড়ে ছিল।
এগুলো এখন আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন যেসব দেশে খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে সেখানে রপ্তানি করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
খাদ্যশস্য রপ্তানির দিক থেকে ইউক্রেন পৃথিবীর চতুর্থ স্থানে। পৃথিবীর সানফ্লাওয়ার তেলের ৪২%, ভুট্টার ১৬% এবং গমের ৯% উৎপাদিত হয় ইউক্রেনে।
যে দেশগুলোতে ইউক্রেনের গম সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় তার মধ্যে প্রথম তিনটি হচ্ছে মিশর, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশ।
সূত্র : বিবিসি