নিজস্ব প্রতিবেদক :
DP
Dhaka Post
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
অর্থনীতি
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
খেলা
বিনোদন
স্বাস্থ্য
শিক্ষা
লাইফস্টাইল
প্রচ্ছদ
জাতীয়
উৎসব-মেলাসহ জনসমাগম ওদের টার্গেট
Dhaka Post Desk
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:৪৪ পিএম
7
Shares
facebook sharing buttonmessenger sharing buttonwhatsapp sharing buttoncopy sharing button
উৎসব-মেলাসহ জনসমাগম ওদের টার্গেট
বিভিন্ন উৎসব, মেলাসহ জনসমাগম টার্গেট করা ছিনতাই চক্রের মূলহোতাসহ ৩২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা হতে রাত পর্যন্ত র্যাব-৩ এর কয়েকটি দল একযোগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
র্যাব জানায়, রাজধানীর কোতোয়ালী, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা, হাতিরঝিল, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর ও ওয়ারীসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, চক্রের মূলহোতা মোহাব্বত মিয়া (৪০) ও মো. মাসুম (৩৫)। তাদের সহযোগীরা হলেন, ফজল খাঁ (৩২), মো. সাইফ (৩০), মো. আকাশ (২৪), আবু বকর (২১), নজরুল ইসলাম (৪০), মো. আলমগীর (২২), মো. জাহাঙ্গীর (২৮), সোহেল (১৯), মো. সোহেল (৩২), সোহানুর রহমান সাগর (২০), মো. মামুন (১৯), লিটন (২১), মো. আলমাস (২৮), সুজন মিয়া (২২), রাকিব (২৫), মো. রিপন (২২), মো. কালাম (৪০), মো. নজরুল ইসলাম (৪০), সুমন মৃধা (২৬), অন্তর হোসেন রবিন (২৪), আব্দুল রসুল (৩৮), মো. কবির (২৫), ছামিদুল রহমান (৩৪), ইকবাল হোসেন (২০), কামরুল (২১), শহীদুল ইসলাম উজ্জল (২৬), মো. কালু (২০), মো. সুমন (২৫), মো. হৃদয় (১৯) ও সাজিদ খান (১৯)।
গ্রেপ্তারকালে তাদের নিকট হতে সুইচ গিয়ার, চাকু, ক্ষুর, অ্যান্টিকাটার, কাঁচি, ব্লেড, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলি র্যাব-৩ এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, যেকোনো উৎসবকে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তারদের তৎপরতা বাড়ত। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও একুশে বই মেলাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন রাজধানীর এলাকায় প্রচুর লোকসমাগম হয়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা ছিনতাই করত। জনসাধারণের জানমালের ক্ষতি করাই তাদের মূল লক্ষ্য।
বেশ কিছু দিন ধরে বড় ধরনের ছিনতাইয়ের পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক চক্রটি রাজধানীর কোতোয়ালী, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা, হাতিরঝিল, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর ও ওয়ারীসহ বিভিন্ন এলাকায় তৎপরতা চালিয়ে আসছিল। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক কাজের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে চক্রটি।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, সাধারণত এসব এলাকায় ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা ঘোরাফেরা করে। বিভিন্ন অলি গলিতেও উৎ পেতে থাকে। সুযোগ বুঝে তারা পথচারী, রিকশাআরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি ও অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয়।
সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাই কাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধা করে না।
সম্প্রতি রাজধানীর কোতোয়ালী, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা, হাতিরঝিল, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর ও ওয়ারী এলাকায় সন্ধ্যা হতে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের বেশ তৎপরতা পরিলক্ষিত হওয়ায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এ সাঁড়াশি অভিযানটি পরিচালনা করে।
র্যাব-৩ সিও বলেন, ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা যাদের থেকে ছিনতাই করবে তাদেরকে আগে থেকে অনুসরণ করতে থাকে। অনুসরণ করা ব্যক্তির সঙ্গে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ধরনের কথা বলতে থাকে। একপর্যায়ে কথা বলতে বলতে সুবিধামতো কোনো জায়গায় নিয়ে যায় এবং সেখানে ছিনতাইকারী চক্রের অন্য সদস্যরা উপস্থিত হয়। চক্রের কোনো সদস্য ব্যক্তির সঙ্গে বিতর্কে জড়ায় ও মারধর শুরু করে। লোকজন এগিয়ে আসলে বলে, নিজেদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির কারণে এ মারামারি। ততক্ষণে চক্রের কেউ ছিনতাইয়ের কাজটি সেরে ফেলে।
এছাড়াও তারা ছিনতাইয়ের কাজে বিভিন্ন অভিনব কৌশল অবলম্বন করে থাকে এবং ছিনতাইয়ের কাজে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে। যখন কোনো রিকশা অথবা সিএনজির যাত্রীদের টার্গেট করে তারা অন্য একটি রিকশা অথবা সিএনজি নিয়ে ওই ব্যক্তির পেছনে যেতে থাকে। ছিনতাইকারীদের সুবিধামতো স্থানে পৌঁছে যাত্রী ও চালককে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নেয়। ছিনতাইকারীরা তাদের ছিনতাইয়ের অর্থ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের নেশা করে। কেউ কেউ জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের অধিকাংশেরই রাজধানীতে বসবাসের জন্য স্থায়ী কোনো বাসস্থান নেই উল্লেখ করে লে. কর্নেল আরিফ বলেন, তারা সবাই রাজধানীর বিভিন্ন বস্তিতে ভাসমান অবস্থায় বসবাস করেন। চক্রের সদস্যদের মধ্যে প্রায় সবার বিরুদ্ধে মাদক ও ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এ চক্রের সদস্যরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিনে মুক্ত হয়ে পুনরায় একই অপরাধে জড়ায় বলে জানায়। গ্রেপ্তারদের বেশ কয়েকজন সদস্য আগেও র্যাব-৩ কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়ে সাজা ভোগ করে কারাগার হতে মুক্তি পেয়ে পুনরায় ছিনতাইসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আবারও যুক্ত হয়।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে র্যাব-৩ এর এ কর্মকর্তা জানান, র্যাব-৩ বিগত ছয় মাসে ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ৭৯টি অভিযান পরিচালনা করে ২৬৮ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।