নিজস্ব প্রতিবেদক : এবার বগুড়া জেলায় সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি দেখা দিয়েছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মাঠ থেকে সরিষা তুলে মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, স্বল্প খরচে বেশি লাভজনক হওয়ায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাঁচ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এখন জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে সরিষার বেচাকেনা চলছে বলেও জানা গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৩৭ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় পাঁচ হাজার হেক্টর বেশি। এবার সরিষার ফলন আসবে ৬৩ হাজার ৮১৭ টন। যা থেকে তেল পাওয়া যাবে প্রায় ২৫ হাজার ৫৫০ টন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক জানান, জেলায় এবার ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু এ বছর জেলায় ৩৭ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। যাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চাষ হয়েছে। স্বল্প খরচে বেশি লাভের কারণেই কৃষক সরিষা চাষ করছে। এছাড়া সরকার ৩ বছরের মধ্যে ভোজ্য তেলে স্বয়ংসম্পূর্ন হতে চায়। আমদানি সয়াবিন তেলের ওপর সরকার নির্ভর করতে চায় না। ইতোমধ্যে দেশের মানুষের মধ্যে সরিষার তেল খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, স্থান ভেদে এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষে সর্বোচ্চ খরচ হয় পাঁচ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ৩ থেকে ৫ মণ সরিষা উৎপাদন হবে।
গত মৌসুমে আলু চাষ করে লোকসান গুনেছেন জেলার কাহালু উপজেলার বাখড়া গ্রামের কৃষক শহিদ ইসলাম।
তিনি জানান, আলু আবাদ করে গত বছর সব মিলিয়ে লোকসান হয়েছে। তাই এবার দেশি সরিষা আবাদ করেছেন। এক বিঘা সরিষা আবাদে খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকা। সরিষার মাড়াই শেষে পেয়েছেন প্রায় ৪ মণ।
জেলার মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা জানান, বিঘাতে আলু উৎপাদনে খরচ পড়ছে ৩০ হাজার টাকার বেশি। সেখানে নিজের জমিতে সরিষা চাষে খরচ হচ্ছে ২/৩ হাজার টাকা। আর পত্তন বা বর্গা নেওয়া জমিতে সার ও অন্যান্য খরচসহ পাঁচ হাজার টাকা।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার পন্ডিত পুকুর হাটে সরেজমিনে দেখা যায়, সরিষা মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৮০০ টাকা থেকে তিন হাজার ২০০ টাকা দরে।
কাহালু উপজেলার ভেটিসোনাই গ্রামের কৃষক আরাফাত জানান, তিনি হাইব্রিড সরিষা এনেছেন ৮ মণ। প্রতিমণ ২৮শ’ টাকা দরে বেচে দিয়েছেন। অন্যান্য হাটের তুলনায় এই হাটে বেশি দাম পাওয়া যায়। গত সপ্তাহে সরিষার দাম মণপ্রতি আরও ২শ’ টাকা কম ছিল। এবার সরিষার ভালো দাম পেয়ে খুশি তিনি।