মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ,বগুড়া প্রতিনিধিঃ এবারের এমবিবিএস ১ম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে চান্সপ্রাপ্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান মোছাঃ নাজিরা সুলতানার পাশে দাঁড়িয়েছে বগুড়া জেলা প্রশাসন। বুধবার দুপুরে বগুড়া জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম নাজিরার বগুড়া শহরের শিববাটিস্থ ভাড়া বাসায় উপস্থিত হয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং ভর্তি, নতুন বই ক্রয় সহ পড়ালেখার সহযোগিতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ওইচ্ছিক তহবিল থেকে ৫০ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেন।
এসময় জেলা প্রশাসক নাজিরাকে বলেন, টাকা পয়সার কোন চিন্তা করবে না। জেলা প্রশাসন সব সময় তোমার পাশে রয়েছে। তুমি ভালোভাবে পড়ালেখা করে মানুষকে স্বাস্ত্যসেবা দিবে এই দোয়া করি। জবাবে নাজিরা , পিতা নজরুল ইসলাম ,মাতা হালিমা বেগম জেলা প্রশাসককে ধণ্যবাদ জানান এবং দোয়া চান। এসময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ ফিরোজা বেগম সহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উলেখ্য, নাজিরার গর্বিত পিতা মোঃ নজরুল ইসলাম নর সুন্দরের (সেলুন শ্রমিক) কাজ করে সংসার চালান। কিন্তু সেই কষ্টের মধ্যে লেখাপড়া করে সে এবারের এমবিএসএস প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় ৭২ নম্বর পেয়ে জাতীয় মেধা তালিকায় ১৫৬৮তম স্থান অধিকার করে সিলেট এমএ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। সে রেটিনা মেডিকেল ভর্তি কোচিং বগুড়া শাখায় কোচিং করেছে। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারনে মেয়ের ভর্তি সহ পড়াশেনার খরচ নিয়ে পিতা মাতা ও নাজিরা দুশ্চিন্তায় ছিলেন। কারন সেলুনে কাজ করে যে আয় হয় তা দিয়ে কোনমতে সংসার চলে।
নাজিরার গর্বিত পিতা নজরুল ইসলাম জানান, তার বাড়ী বগুড়া সদরের এরুলিয়া ইউনিয়নের এরুলিয়া মাঠ ফকির পাড়া। স্ত্রী ও ২ মেয়ে তার। নাজিরা সুলতানা বড় এবং ছোট মেয়েটি শহরের শিববাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ম শ্রেণীতে পড়ে।
তিনি বলেন, নাজিরা ২০২০ সালে স্থানীয় ছয়পুকুরিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি ও বগুড়া সরকারী মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ থেকে ২০২২ সালের এইচ এসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। তিনি বলেন, দুই মেয়ের লেখাপড়ার জন্য স্ত্রীকে নিয়ে বগুড়া শহরের শিববাটি এলাকায় ছোট্র একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছি।
শহর থেকে প্রতিদিন নিজ এলাকা এরুলিয়ার ভাড়া দোকান ঘরে গিয়ে সেলুনে কাজ করি। আমার নিজের কোন সহায় সম্পদ নেই। সারাদিন নিজে যে আয় করি তাই দিয়ে দুই মেয়ের লেখা পড়া , বাসা ভাড়া ও অন্যান্য খরচ চালাতে হয়।