মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ ,বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে (ভিএম) একজন অভিভাবকের (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ জেবুন্নেছা ইয়াসমিন ) পা ধরে অপর দুই অভিভাবকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার ঘটনা কেন্দ্র করে রাস্তা অবরোধের পর ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসক ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন ।
সেই সাথে অভিযুক্ত বিচারকের বিুরদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ঘটনা তদন্তে প্রধান শিক্ষিকা ও শ্রেণী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সোমবার বিদ্যালয়ে ঝাড়ু দেয়াকে কেন্দ্র করে ওই অতিরিক্ত জেলা জজের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে জারা এর সাথে তার সহপাঠীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পাল্টাপাল্টি পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে মঙ্হলবার রাস্তা অবরোধ ও প্রতিবাদের ঘটনা ঘটে।
বগুড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণি ঘ শাখায় বগুড়া জজ আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ -৩ আদালতের বিচারক জেবুন্নেছা ইয়াসমিনের মেয়ে পড়াশোনা করে। বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে থাকে। গত সোমবার ওই কর্মকর্তার মেয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার কথা ছিল। তবে নিজেকে জজের মেয়ে পরিচয় দিয়ে সে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দিতে অস্বীকার করে। এই নিয়ে তার অপর সহপাঠীদের সাথে বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ করে বলেন, ওই রাতেই জজের মেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মাধ্যম মেসেঞ্জারে তার সহপাঠীদের বস্তির মেয়ে উলেখ করে পোস্ট দেয়। এই সময় সে পোস্টে উলেখ করে, তোরা বস্তির মেয়ে। আমার মা সরকারি কর্মকর্তা। তোদের মায়েদের বল আমার মায়ের মতো জজ হতে।
ওই পোস্টে বিচারকের মেয়ের ৪ জন সহপাঠী পাল্টা উত্তর দেয়। এই নিয়ে ওই জজ সকালে বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনকে মঙ্গলবার ওই ৪ অভিভাবককে ডাকতে বলেন। মঙ্গলবার সকাল ১১ টার দিকে প্রধান শিক্ষাকের ডাকে ওই ৪ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে আসেন। ওই সময় সেই কর্মকর্তা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হুমকি দিয়ে জেল দেওয়ার কথা বলেন। এই সময় দুই অভিভাবকে ওই জজের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়।
এ খবর ছাত্রীদের মাছে ছড়িয়ে পড়লে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তারা এ অপমান মেনে নিতে না পেরে বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। তারা স্কুলের সামনের রাস্তা দুদফা অবরোধ করলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে জেলা প্রমাসক বিচারের আশ্বাস দিলে তারা ক্যম্পাসে ফিরে যায়। এরপর স্কুল প্রাঙ্গনে সবাইকে নিয়ে প্রকাশ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে ছাত্রী , শিক্ষক , অভিভাবকরা নিজেদের বক্তভ্য দেন।
এ বিষয়ে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন বলেন, কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে ডাকা হয়। তাদের সাথে কথা বলা হয়। কিন্তু অভিভাবকের মাফ চাওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে। অভিভাবকেরা ভয় পেয়ে এভাবে মাফ চেয়েছেন। তাদের কেউ বাধ্য করেনি।
বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াসমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা ও দায়রা জজ আমাকে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা েেজজর বিরুদ্ধে হাইকোর্ট ও আইন মন্ত্রনালয় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবে।