নিজস্ব প্রতিবেদক : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পাচ্ছে জাপানি প্রতিষ্ঠান। গতকাল রোববার বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান ও বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বৈঠক করেছেন। বৈঠকে টার্মিনাল পরিচালনায় জাপানের দেওয়া ৬টি কোম্পানির বিষয় পর্যালোচনা করা হয়। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, টার্মিনালটি পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে জাপানি প্রতিষ্ঠান।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) শফিউল আজিম জানান, শুরু থেকেই সুনামের সঙ্গে বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব পালন করছে বিমান। তবে সরকার যে প্রতিষ্ঠানকে ভালো মনে করবে, তারাই পরিচালনার দায়িত্ব পাবে।
বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, নতুন টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালনার জন্য পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় প্রস্তুতি চলছে। এর আগে টার্মিনালের ‘অপারেশন অ্যান্ড মেইন্টেন্যান্স’ প্রকল্পের নীতিগত অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এরই মধ্যে টার্মিনালটির ৬৭ শতাংশের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী অক্টোবরে টার্মিনালটির (আংশিক) উদ্বোধন করা হবে।
এ ব্যাপারে বেবিচক চেয়ারম্যান সমকালকে বলেন, তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টার্মিনালটির উদ্বোধন করবেন। তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পের মধ্যে পড়েছে ভিভিআইপি টার্মিনাল ভবন। এ কারণে আগামী ৬ এপ্রিল ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে। জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের আদলে নির্মাণ করা হচ্ছে তৃতীয় টার্মিনাল। প্রকল্প ব্যয় একাধিকবার বেড়ে প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল মালেক বলেন, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিমানবন্দরগুলোর মতো সুযোগ-সুবিধা থাকবে তৃতীয় টার্মিনালে।
প্রকল্পের কয়েকজন প্রকৌশলী জানান, ৩৫০ একর জমির ওপর নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনালে থাকবে ৪০টি কেবিন এক্সরে মেশিন, ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১৬টি কনভেয়ার বেল্ট, ১১টি বডি স্ক্যানার ও টানেল। থাকবে ৫৪ হাজার বর্গমিটারের বহুতলবিশিষ্ট কার পার্কিং, নতুন ইমপোর্ট কার্গো কমপ্লেক্স এবং ৬৩ হাজার বর্গমিটারের এক্সপোর্ট কার্গো কমপ্লেক্স। এ ছাড়া থাকবে রেসকিউ ও ফায়ার ফাইটিং স্টেশন এবং ৪ হাজার বর্গমিটার আয়তনের ইকুইপমেন্ট স্টেশন।
উড়োজাহাজ চলাচলের জন্য তৈরি হচ্ছে ২৪ হাজার বর্গমিটার কানেক্টিং ট্যাক্সিওয়ে (উত্তর), ৪২ হাজার ৫০০ বর্গমিটার কানেক্টিং ট্যাক্সিওয়ে (অন্যান্য) এবং ২২ হাজার বর্গমিটার র্যাপিড এক্সিট ট্যাক্সিওয়ে (উত্তর)। এ ছাড়া থাকবে ১৯ হাজার ৫০০ বর্গমিটার র্যাপিড এক্সিট ট্যাক্সিওয়ে (দক্ষিণ)।
টার্মিনালের চারদিকে থাকবে নিশ্ছিদ্র সীমানা প্রাচীর, সিকিউরিটি গেট, গার্ডরুম এবং ওয়াচ টাওয়ার। টার্মিনালটির অন্যতম আকর্ষণ ফানেল টানেল। উড়োজাহাজ রাখার জন্য থাকবে ৩৬টি পার্কিং বে। ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের অ্যাপ্রোনে একসঙ্গে রাখা যাবে ৩৭টি উড়োজাহাজ। বহুতল কার পার্কিং ভবনে রাখা যাবে ১ হাজার ২৩০টি গাড়ি।