মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ,বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে কয়েকটি দলকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে জেলা সংস্থার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ক্ষুদ্ধ পেশাদার খেলোয়াড়রা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি ৪ বছর পরপর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী ২৭ মে বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করা হয়েছে।
তফশিল মোতাবেক গত ২৮ এপ্রিল-২০২৩ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ-৭ এর ৭.১ ধারায় বলা হয়েছে “তবে সাধারণ পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্নের পূর্ববর্তী ১ (এক) বৎসরের মধ্যে ক্লাব/সমিতি/প্রতিষ্ঠানকে অ্যাফিলিয়েশন প্রদান করা যাবেনা।” একই অনুচ্ছেদের ৮.২৩ ধারায় বলা হয়েছে “ বাছাইয়ে অংশগ্রহণকৃত কোনো দলই প্রতিনিধি পাবার যোগ্য হবে না।”
অথচ ১৮ নভেম্বর-২০২২ তারিখ থেকে শুরু হওয়া বাছাই ক্রিকেট লিগে উত্তীর্ন ৪টি দল এম. এইচ ইন্টারন্যাশনাল, এম. আর স্পোর্টিং ক্লাব, এ. জেড স্পোর্টিং ক্লাব এবং সজিব সংঘ কে কাউন্সিলরশিপ দিয়ে এবারের নির্বাচনে ভোটার করা হয়েছে, যা গঠনতেন্ত্রর সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন।
গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ-১১: এর ১১.৮ ধারায় বলা হয়েছে “সাধারণ পরিষদ গঠনের অব্যবহিত ৪ (চার) বৎসর পূর্বের মেয়াদকালের মধ্যে জেলা ক্রীড়া সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত অ্যাফিলিয়েটেড ক্লাব/সমিতি/প্রতিষ্ঠান দলগত যে কোন একটি একই খেলায় পূর্ণাঙ্গ লিগ ২ বার অংশগ্রহণ করলে ১ জন প্রতিনিধি পাবে।” একই অনুচ্ছেদের ১১.৯ ধারায় বলা হয়েছে “সাধারণ পরিষদ গঠনের অব্যবহিত ৪ (চার) বৎসর পূর্বের মেয়াদকালের মধ্যে জেলা ক্রীড়া সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত অ্যাফিলিয়েটেড ক্লাব/সমিতি/প্রতিষ্ঠান দলগত পরবর্তী প্রতি তিনটি একই খেলায় পূর্ণাঙ্গ লিগ ২ বার অংশগ্রহন করলে ১জন করিয়া প্রতিনিধি পাবে।”
অথচ যে ৪টি দলের প্রতিনিধিদের এবারের নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রদান করা হয়েছে তারা ৩ মাস পূর্বে বাছাই লিগ খেলে উত্তীর্ন হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রাক্তন ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক বগুড়া সদরের টনি স্মৃতি সংঘের সভাপতি শাজাহান আলী বাবুর অভিযোগ, এবারের বাছাই লিগ থেকে ৪টি দল অন্যায়ভাবে বাদ দিয়ে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে নতুন ৪টি দলকে কাউন্সিলরশিপ দেয়া হয়েছে। শুধু এবারই নয়, মাসুদুর রহমান মিলন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে নিজের খেয়াল খুশি মত নন খেলোয়াড়দের কাউন্সিলরশিপ দিয়েছেন। ক্রীড়াবিদদের মূল্যায়ণ না করে জেলা ক্রীড়া সংস্থায় রাজনীতিক-ও ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে সাধারন সম্পাদক মাসুদার রহমান মিলন বলেন, খসড়া ভোটার তালিকা সম্পর্কে কেউ আপত্তি দেয়নি। তিনি দম্ভ করে বলেন, আপনি লিখে দেন আমরা অবৈধভাবে জেলা ক্রিড়া সংস্থার ক্ষমতায় আছি এবং থাকতে চাই। আপনারা পত্রিকায় অনেক কিছু লিখেন , পত্রিকায় লিখে কিছু হয়না।
নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে নিয়োজিত বগুড়া জেলার শিবগন্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার আনিসুর রহমান কবির বলেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থা প্রদত্ত খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার পর কেউ উপরোক্ত আপত্তি করেনি। সামান্য যেসব সংশোধনীর আবেদন পাওয়া গেছে তা সংশোধন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বগুড়া জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি অনিয়মের তথ্য দেয়ার পরামর্শ দেন।