শামীম রেজা ডাফরুল, গোবিন্দগঞ্জ(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে কাটাবাড়ী সঞ্চয় ও খণদান সমবায় সমিতি লিঃ (কেএসএসএল) এর বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে সদস্যদের অর্থআত্মসাতের মামলায় সমিতির পরিচালক সহ ৫ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে অর্থ ফেরৎ সহ গ্রেফতারকৃতদের বিচার দাবীতে গ্রাহকরা ফুটানিবাজার শাখা ঘেড়াও করে শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত দেড়টা পর্যন্ত গাইবান্ধা-গোবিন্দগঞ্জ সড়কের ফুটানি বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ।
রাতে উপজেলা প্রশাসনের আশ্বাসে গ্রাহকরা অবরোধ তুলে নেয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন কেএসএসএল এর পরিচালক ও কাটাবাড়ী ইউনিয়নের ৫নং কাটাবাড়ী গ্রামের মৃত মিনহাজ উদ্দীনের পুত্র আওরঙ্গজেব, তার পুত্র সমিতির কর্মকর্তা শাহেদ আলী, জেনারেল ম্যানেজার ও বেতারা গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের পুত্র ফজলুর রহমান, ফুটানি বাজার শাখার ম্যানেজার ও কামারদহ ইউনিয়নের সতিতলা গ্রামের মাহমুদুল হকের পুত্র মঞ্জুরুল ইসলাম, মাঠকমী ও তালুক কানুপুর ইউনিয়নের উত্তরপাড়া গ্রামের নূর আলম প্রধানের পুত্র আল আমিন প্রধান ।
জানা গেছে, কাটাবাড়ী সঞ্চয় ও খণদান সমবায় সমিতি (কেএসএসএল) নামে উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ফুটানিবাজারে শাখা স্থাপন করে বিনা মুল্যে ছাগল ও গরু দেয়ার কথা বলে সদস্য সৃষ্টি করে। এরপর তাদের কাছ থেকে সঞ্চয়ের নামের প্রতি সপ্তাহে অর্থ উত্তোলন করে।
এই শাখার বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৩ হাজার ৫শ ৬৩ জন। এই সদস্যদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা সঞ্চয় উত্তোলন করা হয়।
কিন্তু, সমিতির কথা অনুযায়ী গরু-ছাগল না দিয়ে তারা গ্রাহকদের নানা অজুহাতে টালবাহানা ও হয়রানি করতে থাকে। এরপ্রেক্ষিতে কয়েকজন সদস্য তাদের সঞ্চয় করা অর্থ ফেরত দাবী করলে কর্মকর্তারা গ্রাহকদের সাথে র্দুব্যবহার করে।
এই খবর ছড়িয়ে পরলে শত শত সদস্য বিকেলে কেএসএসএল এর ফুটানি বাজার শাখা অফিস ঘেরাও করে এবং স্থানীয় শাখা ব্যবস্থাপককে আটক করে রাখে। একপর্যায়ে সদস্যরা গোবিন্দগঞ্জ-গাইবান্ধা ভায়া নাকাই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। রাত দেড়টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফ হোসেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার উদয় কুমার সাহা, থানার অফিসার ইনচার্জ ইজার উদ্দীন ঘটনাস্থলে গিয়ে সদস্যদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে সদস্যরা অবরোধ ্রপ্র্যাহার করে।
এদিকে রবিবার দুপুরে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে এ ব্যাপারে নামীয় ৯ জন সহ অজ্ঞাতনামা বিভিন্ন শাখায় কর্মরত ১৫জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের মামলা দায়ের করেন।
তিনি বলেন, সমবায় নিয়ম অনুযায়ী রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত কোন সমিতি একের অধিক একই নামে তাদের শাখা অফিস খুলতে পারে না। অথচ কর্তৃপক্ষ কেএসএসএল নামে গোপনে গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ী উপজেলায় ৯টি শাখায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং সঞ্চয়ের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেছে। যা সম্পূর্ণঅবৈধ।
পুলিশ গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) বুলবুল ইসলাম জানান, তাদেরকে আজ দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং পলাতক অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।