নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল করিমের ওপর হামলার ঘটনায় রাজধানীতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। শুক্রবার (১৬ জুন) দুপুরে জুমার নামাজ শেষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট প্রাঙ্গণে এই প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বক্তারা নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, নির্বাচনে অনেক ভোট কারচুপি হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলা চালিয়ে তাকে রক্তাক্ত করেছে।
বক্তারা বলেন, এখন বাংলাদেশের মানুষের কোনো অধিকার নেই। তারা নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে না। এই সরকার জনগণের সরকার নয়। এই সরকারের আধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়। আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন চাই না।
তারা বলেন, সরকার এই নির্বাচন দিয়ে জনগণের সঙ্গে তামাশা করেছে। এই তামাশার নির্বাচন বন্ধ করুন। আমরা নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ চাই। এই সরকারের নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। আমরা এই সরকারের অধীনে নির্বাচান চাই না।
বরিশালে হাতপাখার প্রার্থী মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাইসহ নেতাকর্মীদের ওপর সন্ত্রাসীদের বর্বর হামলার প্রতিবাদ এবং ব্যর্থ সিইসির পদত্যাগ দাবিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করে দলের ঢাকা মহানগর শাখা।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোছাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, আমি তো ভালো মতোই জানি, আমি বাড়িতেই ছিলাম। সব জায়গা ঘুরে দেখেছি। ওই যে নৌকার ৮৭ হাজার ভোট দেখিয়েছে, সেটা হাত পাখার ভোট। ৩৪ হাজার ভোট হচ্ছে নৌকার ভোট। ওখানে আসলে নৌকা পাস করেনি, হাতপাখা পাস করেছে। সেখানে আওয়ামী লীগের কতজন লোক আছে সেটা আমরা জানি।
মাওলানা সৈয়দ মোছাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, খুলনাতেও হাত পাখার জয় হয়েছে। কিন্তু সেখানেও ইভিএমের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আমরা নিজেরা সেটি বুথে হাতেনাতে ধরেছি। জগদ্দল পাথরের মত আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে। আমাদের এখন এক দফা এক দাবি, হাসিনা তুই কবে যাবি।
তিনি বলেন, সিইসি একজন মানসিক রোগী। তার পদে থাকার কোনো যোগ্যতা নেই। এই মানসিক রোগীকে তাড়াতাড়ি চিকিৎসা করাতে হবে পাবনায় নিয়ে। এখানে সিইসিকে আর রাখা যাবে না। এই জালেম সরকারকে হঠাতে আমাদেরকে রাজপথে থাকতে হবে। আমাদের একটাই কথা এই জালিম সরকারকে আর থাকতে দেওয়া যাবে না।
কর্মসূচি ঘোষণা করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, শনিবার (১৭ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমাদের সমাবেশ হবে। বিকেল ৪টার ওই সমাবেশে আপনারা সবাই উপস্থিত থাকবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত এই শেখ হাসিনার প্রতন না ঘটবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না। আমরা এই সরকারের পতন ঘটাবই ঘটাব ইনশাল্লাহ।
এছাড়া আগামী রোববার (১৭ জুন) সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের পল্টনের কেন্দ্রীয় অফিসে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।
দলটির সহকারি মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, শুধু বরিশাল আওয়ামী লীগ নয়, সরকার ও সারাদেশের আওয়ামী লীগ এই হামলায় জড়িত। আওয়ামী লীগের নেতা ও সরকারের মন্ত্রী থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশন এই ধরনের পাতানো নির্বাচনে জড়িত।
সমাবেশে দলটির সমর্থকরা একের পর এক সরকার বিরোধী শ্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে সবাই একযোগে মিছিল করতে করতে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে পল্টন মোড় থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় প্রদক্ষিণ করেন। সেময় তারা উত্তেজিত ছিলেন।
এদিকে ইসলামী আন্দোলনের এই কর্মসূচির কারণে দৈনিক বাংলা মোড় থেকে নাইটিঙ্গেল হয়ে পল্টন মোড় পর্যন্ত পুরো এলাকায় প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়।