নিজস্ব প্রতিবেদন: ঘনিয়ে আসছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের আর মাত্র বাকি তিন মাস। আগামী মাসেই ঘোষণা হতে যাচ্ছে তফসিল। বিএনপি শুরু থেকেই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের এক দফা দাবিতে আটকে আছে, আর আওয়ামী লীগও সংবিধানের বাইরে যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে।
এই অবস্থায় মার্কিন নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে এসে সংকট সমাধানে ৫টি প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে সংলাপের বিষয়টিকে তারা অধিক গুরুত্ব দিয়েছে। তারা মনে করে একটি সংলাপের মধ্য দিয়ে চলমান সংকটের একটা সমাধান আসতে পারে।
গত শনিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক অনুষ্ঠানে বলেন, কেবল নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের শর্তেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে যাবে বিএনপি।
তবে গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কোনো শর্ত দিলে বিএনপির সঙ্গে সংলাপে যাবে না তারা। যদি তাদের কোনো শর্ত না থাকে তবে আওয়ামী লীগ সংলাপ নিয়ে চিন্তা করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) প্রতিনিধিদের নিয়ে গড়া এই দল গত ৮ থেকে ১১ অক্টোবর ঢাকা সফর করেছে। গত শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে পর্যবেক্ষকদলটি বাংলাদেশ সফর নিয়ে তাদের মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের ওপর জোর দিয়েছে দলটি। আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য বড় পরীক্ষা বলেও মন্তব্য করেছে তারা।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, ভালো নির্বাচন এবং রাজনৈতিক দূরত্ব ঘোচাতে একমাত্র কাজ হলো আলাপ-আলোচনা। সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেন, সংলাপ হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে তো আমরা দেখি না। দুদলের কথাবার্তার মধ্যে একটা যুদ্ধাংদেহি মনোভাব বিরাজ করছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে চায় না। তবে সংলাপ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা এবং সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সংলাপ খুব জরুরি। কারণ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে। বিশ্ববাসীর অনেক আগ্রহ। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার দূরত্ব ঘোচাতে হবে। এ জন্য একমাত্র উপায় হলো-আলাপ-আলোচনা করা।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা-একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন; ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার নির্বাচিত করতে চায়। ? একটা দখলদার ও অনির্বাচিত সরকারের সঙ্গে বিএনপির যাওয়ার কোনো কারণ নেই। বরাবর আমরা বলে আসছি-নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে না। এটি বাংলাদেশের জনগণের চাওয়া।