রবিউল ইসলাম, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ ও পৌর এলাকার শহরের ৬ নং ওয়ার্ডের টাওয়ার পাড়ার জাহাঙ্গীর আলমের কন্যা ৯ম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী সূচনা জান্নাত ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলে তার এই অকাল প্রয়ানে ঝিনাইদহ কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ পরিবারের পক্ষ থেকে শোক সন্তপ্ত পরিবারকে গভীর সমবেদনা জানানোর লক্ষে এবং তার বিদেহী আত্নার মাগফিরাত কামনার জন্য প্রতিষ্ঠানে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার সকাল সাড়ে নয়টার সময় ঝিনাইদহ কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গনে এ শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়।
ঝিনাইদহ কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসুর সুষেন্দু কুমার ভৌমিক এর সভাপতিত্বে এবং প্রতিষ্ঠানের ইসলামি শিক্ষা বিভাগের সহকারি শিক্ষক মেহেদী হাসান দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন।
উল্লেখঃ মেধাবী ছাত্রী সূচনা জান্নাতের অ্যাপেন্ডিসাইটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাকে স্থানীয় ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ২৬ এপ্রিল ডাক্তার মোঃ মোজাম্মেল হক (সহকারি অধ্যাপক ইউরোলজি) সূচনার অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করেন। এসময় এ্যানাস্থেসিয়ার দায়িত্ব পালন করেন ডা. মুন্সী মোঃ রেজা সেকেন্দার। অপারেশনের পর সূচনার জ্ঞান না ফেরায় ঘটনার পরদিন ২৭ এপ্রিল ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।
প্রথমে ধানমন্ডির ইবনে-সিনাহ্ হাসপাতালে ১২ দিন এবং নিউরোসাইন্স হাসপাতালে ডাক্তার প্রফেসর দিন-মোহাম্মদ এর তত্বাবধানে আইসিইউতে ১৭ দিন ভর্তি থাকার পর জ্ঞান না থাকা অবস্থায় সে ইন্তেকাল করেন। ওই দিনই সূচনার মৃতদেহ ঝিনাইদহ শহরের বাড়িতে পৌছালে পরিবার আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশি বন্ধু-বান্ধব কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তাদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। তার দীর্ঘদিনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাকে দুপুর ১টার দিকে নিয়ে যাওয়া হলে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থিদের মাঝে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
মেধাবী শিশু এই শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যু হওয়ায় তার পরিবার পরিজন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাই এটাকে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু বলে দাবি করেছেন। তারা সূচনার অকাল মৃত্যুর বিচার দাবি করেন।সূচনাকে ২৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবারে বাদ যোহর স্থানীয় উজির আলী ঈদগাহ ময়দানে জানাযা শেষে পৌর গোরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
ঝিনাইদহ কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মেধাবী এই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে বিচার দাবি করেন। এ ঘটনায় সূচনা জান্নাতের পিতা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন এবং ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক ও ঝিনাইদহ কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি এস.এম রফিকুল ইসলাম বিষয়টি অবগত হয়েছেন এবং বিষয়টি তদন্তের জন্য ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন।