এম আর অভি, বরগুনা প্রতিনিধি: সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ফেরিঘাট কে.বি শিশু সদন (কওমিয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ) ভুয়া এতিম দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার শিক্ষক ও পরিচালক মুহতামিম ইব্রাহিম খলিলের বিরুদ্ধে ।
জানাগেছে ,(২০২২-২৩ ও ২০২৩ -২৪ ) প্রতি অর্থ বছরের ১০ জন এতিম শিক্ষাথীদের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ডের আওতায় জন প্রতি দুই হাজার টাকা সরকারি ভাতা দেয়া হয়। বুড়িরচর ফেরিঘাট কে.বি শিশু সদন (কওমিয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ১০ জনের মধ্যে ৫ জনই ভুয়া এতিম দেখিয়ে এ সরকারি বরাদ্দ বছরের পর বছর মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি আত্মসাৎ করছে এমন অভিযোগ করেছে ওই এলাকার ভুক্তভোগী আবু তালেব নামের এক ব্যক্তি।
জেলা প্রশাসক সহ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিকট লিখিত অভিযোগ তিনি উল্লেখ করেন আমি জীবিত থাকার পরেও আমাকে মৃত্যু দেখিয়ে আমার পুত্র আবু আল গালিবকে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী হিসেবে পিতৃহীন এতিম ও পরিত্যক্ত দেখিয়ে সরকারি ভাতা তুলছেন ওই মাদ্রাসার শিক্ষক ও পরিচালক। তিনি লিখিত অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে পিতৃত্বহীন এবং পরিত্যক্ত দেখিয়ে এতিম ভাতা এর সুপারিশ তালিকায় আমার ছেলে আবু আল গালিবের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। এতিম ভাতার ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা ।
জীবিত থাকার পরেও মাদ্রাসা পরিচালনা কতৃপক্ষ আমার সন্তান কে পিতৃত্বহীন এর তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করায় সামাজিক ভাবে আমার মান সম্মান ক্ষুন্ন ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি । মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কেন কিভাবে তার সন্তান কে পিতৃত্বহীন ও পরিত্যাক্ত দেখিয়ে ভাতা তোলার সুপারিশ তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করে তার তদন্তের দাবি জানান তিনি।
বুড়িরচর ফেরিঘাট কে.বি শিশু সদন (কওমিয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ) পরিচালক মুহতামিম মাওলানা ইব্রাহিম খলিলের কাছে মুঠোফোনে এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন , ২০২৩ সালে পিতা আছে আবু আল গালিবের নাম ভুল বসত এতিমের তালিকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০২৪ সালে তাঁর নাম বাঁধ দেয়া হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ডের আওতায় ভাতা পেতে যে তালিকা জমা দেয়া হয় সেখানে সভাপতির স্বাক্ষর নিজে করে কিন্তু সাধারণত সম্পাদক বিদেশে থাকায় তার স্বাক্ষর পরিচালক দিয়ে তালিকা জমা দেয়ার কথা স্বীকার করেন।
এতিম ৫ জন থাকলেও ১০ জন থাকার কথা জানান। তিনি আরো জানান,সমাজসেবা কর্মকর্তারা সরজমিনে তালিকা যাচাই-বাছাই করেই ভাতা প্রদান করেন । তবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেশী টাকা নেওয়া হলেও ৩০০ টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেন ওই মাদ্রাসা পরিচালক মুহতামিম মাওলানা ইব্রাহিম খলিল।
এ বিষয়ে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শহিদুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বাবা থাকার পরেও এতিম তালিকায় পরিত্যক্ত দেখানোর কারণে ডিসি স্যারের কাছে অভিযোগ করায় স্যারের নির্দেশ আমি বুড়িরচর ফেরিঘাট কে.বি শিশু সদন (কওমিয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ) সরজমিনে তদন্তে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি তালিকার সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই।
এটা অন্যায়। ১০ জন এতিম থাকার জায়গায় পাওয়া গেছে ৫ জন । এতিম অন্তর্ভুক্ত তালিকায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের যাচাই-বাছাইর পরেও এসব অনিয়ম কিভাবে এড়িয়ে যায় এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। তাছাড়া সাধারণ সম্পাদক বিদেশে থাকায় এতিম অন্তর্ভুক্ত তালিকায় অন্যকেউ তার স্বাক্ষর দিতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ,এটা পারে না ।