নিজস্ব প্রতিবেদন: কোটা সংস্কার আন্দোলন ও গণ–অভ্যুত্থানে সরকার পতনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক হামলা–অগ্নিসংযোগে মুখ থুবড়ে পড়ে দেশের পুলিশি কার্যক্রম। পুলিশ সদর দপ্তরসহ দেশের অধিকাংশ স্থানে পুলিশের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত, থানা লুট ও বাহিনীর সদস্যদের হতাহতের ঘটনায় নিরাপত্তার অভাবে থানাগুলো অচল হয়ে পড়ে। এছাড়া পুলিশ হত্যার বিচার ও নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতিতে যায় পুলিশ। এ অবস্থায় থানাগুলো সচল করার চেষ্টা চলছে। আজ শুক্রবার রাত পর্যন্ত সারা দেশে ৫৩৮টি থানার কার্যক্রম শুরু করা গেছে।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, শনিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত সারা দেশের সর্বমোট ৬৩৯টি থানার মধ্যে ৫৩৮টি থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মেট্রোপলিটনের ১১০টি থানার মধ্যে ৮৪টি এবং জেলার ৫২৯টি থানার মধ্যে ৪৫৪টি থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সবমিলিয়ে বর্তমানে থানার সংখ্যা ৫৩৮ টি। থানাগুলোর নিরাপত্তায় সহযোগিতা করছে সেনাবাহিনী।
প্রসঙ্গত, ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনর্গঠনে থানাগুলোর কার্যক্রম শুরুর চেষ্টা করছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কিন্তু জীবনের নিরাপত্তাসহ আরও বেশ কয়েকটি দাবিতে কর্মবিরতিতে থেকে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন পুলিশের অধীনস্থ সদস্যরা।
বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) দায়িত্ব পাওয়া মো. ময়নুল ইসলাম বাহিনীর সদস্যদের কাজে ফিরতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু এ সময়ের একদিন পরও আজ সারা দেশে সব থানার কার্যক্রম শুরু নিশ্চিত করা যায়নি।
ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়ার পর থেকেই দেশজুড়ে থানাসহ পুলিশের স্থাপনাগুলোতে একের পর এক হামলা শুরু হয়। এর আগেও ছাত্র–জনাতার ওপর গুলি চালানোর প্রেক্ষিতে অল্প কয়েকটি থানায় আক্রমণ হয়েছিল। তবে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর থেকে নির্বিচারে আক্রমণ হতে থাকে থানায়, ভাঙচুর-লুটপাটও চলে অনেক থানায়। এসব হামলায় বহুসংখ্যক পুলিশ হতাহত হলে অন্যরা নিরাপদে সরে যেতে থাকেন। গা ঢাকা দেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এতে ভেঙে পড়ে দেশের পুলিশি ব্যবস্থা।
অন্যদিকে পুলিশি ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার পর নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করে পুলিশের অধস্তনরা। পুলিশ সদস্যদের দাবি, বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রাজনীতিবিদদের তাঁবেদারি করার কারণে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পুলিশ। এমনকি নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে সরকারকে বাঁচাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর হুকুম দেয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।