নিজস্ব প্রতিবেদন: নদী ও সাগরে ইলিশ অহরণে টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে আজ শনিবার মধ্যরাত থেকে। মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করতে প্রতিবছর আশ্বিন মাসে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা মাঝে রেখে এ নিষেধাজ্ঞা দেয় মৎস্য অধিদপ্তর। এই সময়ে ইলিশ ধরা, কেনাবেচা ও পরিবহন পুরোপুরি নিষিদ্ধ।
বরিশালের মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, আশ্বিন মাসে ৮০ ভাগ ইলিশের পেটে ডিম আসে। শুধু মিঠাপানিতে ডিম ছাড়ার কারণে এ সময় ইলিশ সাগরের নোনাজল ছেড়ে নদীমুখী হয়। পূর্ণিমা ও অমাবস্যায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝাঁকে ঝাঁকে নদীতে আসে ইলিশ। প্রজনন নিরাপদ করতে তাই প্রতিবছর এই সময়ে ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ বছর ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকবে। অন্য মাছ ধরার অজুহাতে ইলিশ আহরণ ঠেকাতে এই সময়ে জেলেরা নদী বা সমুদ্রে যেতে পারবেন না।
এদিকে গত কয়েক বছর ২২ দিনের এ নিষেধাজ্ঞা অমান্যে বেপরোয়া ছিল বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার মেঘনা তীরের এক শ্রেণির জেলে ও ব্যবসায়ী। প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ করে’ ইলিশ ধরে ওই সময় কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। মেঘনার দুর্গম চরে রাতে বসে ইলিশের পাইকারি বাজার। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে নিষেধাজ্ঞা অমান্যে হিজলায় দলের সহসভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মিলন এবং গত কয়েক বছর মেহেন্দীগঞ্জে দক্ষিণ উলানিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান জামাল মোল্লা ও তাঁর ভাই গোবিন্দপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বেল্লাল মোল্লা নেতৃত্বে ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এই নেতারা সব আত্মগোপন। এখন ইলিশঘাট নিয়ন্ত্রণ করছেন মূলত স্থানীয় বিএনপি নেতারা। এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তারা ইলিশ নিধনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে। দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর প্রথম এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর তাই প্রশাসনের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হবে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে মৎস্য শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ইলিশ নিধন বন্ধ করতে হলে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বাড়াতে হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা যাতে মা ইলিশ নিধনে জড়িয়ে না যায় সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।