এস এম শফিকুল ইসলাম,জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কসহ দশ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত কলেজ বাজার দলীয় কার্যালয় এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এঘটনায় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আহতরা হলেন, আক্কেলপুর পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফাজ উদ্দিন, সদস্য আনিছুর রহমান, আলম হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা বিএনপির সদস্য আমিনুর রশিদ ইকু, জুলফিকার আলী শ্যামল, মিনা হোসেন, রবিন হোসেন, সোহেল রানা ও মামুনুর রহমান।
এদের মধ্য জুলফিকার আলী শ্যামলকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আক্কেলপুর পৌরসভার নয়টি সম্মেলনে কমিটি গঠনে উদ্যোগ নেয় পৌর বিএনপি।
একতরফা ও অগণতান্ত্রিক পন্থায় ওর্য়াড কমিটির সম্মেলনের আয়োজনের অভিযোগ তুলে দলটির একটি পক্ষ তাতে বাঁধ সাধেন।
গত ১৭ অক্টোবর প্রথম দিনে রাজকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পৌরসভার ১-২ ও ৩ নম্বর ওর্য়াডের সম্মেলন ঘোষনা করে পৌর বিএনপি। একই দিনে একই সময় রাজকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পাল্টা প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষনা দেয় অপর পক্ষ।
আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গের আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসন রাজকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারী করায় দলটির কোন পক্ষই পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে পারেনি।
পরে পৌর বিএনপি স্থানীয় সিনিয়র মাদ্রাসা মাঠে সম্মেলন করে ওই তিনটি ওর্য়াডের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার পৌরসভার আরও তিনটি ওর্য়াডের সম্মেলন চকেশা প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে করার ঘোষনা করে পৌর বিএনপি।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত দেখে স্থান পরিবর্তন করে কলেজ বাজারের কাঁচা বাজারের দলীয় কার্যালয় সম্মেলনের স্থান নির্ধারণ করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল চারটায় দলীয় কার্যালয়ে সম্মেলন শুরু হয়।
তখন দলটির অন্য পক্ষের নেতা-কর্মীরা তাতে বাঁধা দেন। এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্য ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মুনিরা সুলতানার নেতৃত্বে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আক্কেলপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আলমগীর চৌধুরী বাদশা বলেন, আজকে বিকেলে পৌরসভার ৭-৮ ও ৯ এই ওর্য়াডের কাউন্সিল দলীয় কার্যালয় অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। হঠাৎ করে বিকেল চারটার দিকে কয়েক জন সন্ত্রাসী হাতে লাঠিসোঁঠা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের নেতা-কমীরা আহত হয়েছেন।
আমরা সম্মেলনের মাধ্যমে তিনটি ওর্য়াডের কমিটি গঠন করেছি। যারা হামলা করেছে তাঁদের কোন দলীয় পরিচয় নেই তাঁরা সন্ত্রাসী। আমরা বিচার দাবি করছি।
পৌর পৌর বিএনপি আহবায়ক কমিটির সদস্য মামুনর রহমান মামুন বলেন, আক্কেলপুর পৌর বিএনপির ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাদ রেখে সুযোগ সন্ধানী ও যারা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে চলেছিল তাঁদের নিয়ে আজকে একতরফা ভাবে কমিটি ঘোষনা পায়তারা করছিল।
আমরা তাঁতে বাঁধা দিতে দিয়েছি। পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আলমগীর চৌধুরীর নেতৃত্বে আমাদের ওপর অর্তকিত হামলা চালানো হয়েছে।
এতে আমিসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভোটের মাধ্যমে সম্মেলন করে কমিটি গঠন করার দাবি করেছিলাম। কিন্তু তাঁরা সেটি না করে ঘরোয়াভাবে পকেট কমিটি গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
আক্কেলপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট মুনিরা সুলতানা বলেন, খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম নিয়ে উপস্থিত হওয়ার আগেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এখন আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।