রবিউল ইসলাম , কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিবেদক:ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় সাথী আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার বারাবাজারে জননী আছিয়া প্রাাইভেট হাসপাতালে সিজারের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধরু মৃত্যু হয়। নিহত গৃহবধু সাথী বারোবাজার বাদেডিহি গ্রামের শরিফুল ইসলামের মেয়ে।
এ ঘটনায় পর নিহতের স্বজন ও স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা হাসপাতালটি ঘেরাও করে মালিককে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে হাসপাতালের মালিক জামাত আলীকে উদ্ধার করলেও রাতেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
নিহত গৃহবধুর পিতা শরিফুল ইসলাম জানায়, শুক্রবার দুপুরের পর তার মায়ের সাথে করে অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে সাথী খাতুনের সিজারের জন্য বারবাজারের জননী আছিয়া প্রাইভেট হাসপাতালে পাঠায়। সন্ধ্যায় ডাক্তারের সিজারের পর একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।
কিন্তু সাথীকে ওটি রুম থেকে বেডে স্থানান্তরের পর পরই প্রচন্ড স্বাস কষ্ট দেখা দেয়। মেয়ের এমন শাষকষ্ট দেখে পিতা শরিফুল বার বার হাসপাতাল মালিকদের কাছে গিয়ে উন্নত চিকৎসার জন্য মেয়েকে বাইরে পাঠানোর অনুরোধ করে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে বাইরে পাঠানো লাগবে না। কিছু সময়ের মধ্যেই রোগী সেরে উঠবে। এদিকে সিজারিয়ান গৃহবধু সাথী খাতুনের শ্বাসকষ্ট ক্রমেই বাড়তেই থাকে।
অপারেশনের দেড় ঘন্টা পর সাথীর মৃত্যু হয়। পিতার ভাষ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে সাথীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বজন ও স্থানীয় বিক্ষুব্ধ শত শত জনতা ওই হাসপাতালটি ঘেরাও করে। এ সময় মালিক জামাত আলী হাসপাতাটালটির মধ্যেই ছিল। পরিস্থিতি উতপ্ত হয়ে উঠলে খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি টিম এসে জামাত আলীকে তুলে নিয়ে যায়। তবে রাতেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, রোগী মৃত্যুর ঘটনায় শত শত জনতা হাসপাতালটির মালিক সহ অন্যান্য স্টাফদের ঘেরাও করে রেখেছিল। পরিস্থিতি শান্ত ও দূর্ঘটনা এড়াতে তিনি তাৎক্ষনিক পুলিশ টিম পাঠিয়ে হাসপাতালের মালিক জামাত আলীকে তুলে নিয়ে আসেন। তাকে কিছু জিঞ্জাসাবাদও করা হয়। সর্বশেষ ওই ঘটনায় লিখিত কোন অভিযোগ না থাকায় হাসপাতালের মালিককে নিরাপদে ছেড়ে দেয় বলে জানান তিনি।
তবে, সার্বিক বিষয় বা কোন ডাক্তার সিজার করেছে এমন বিষয়টি জানতে শনিবার বিকালে হাসপাতালের মালিক জামাত আলীর ০১৯৪২৭০৫৬৩২ নং মেবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিব করেননি। তবে, অন্য একটি সুত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের পর থেকে কালীগঞ্জ উপজেলার কোন প্রাইভেট ক্লিনিক বা প্রাইভেট হাসপাতালের লাইসেন্স নামায়েন করা নাই।
এ ছাড়াও কোন এসব সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন ছাড়পত্র নেই, অপরিচ্ছন্ন হাসপাতালটিতে বৈধ কোন চিকিৎসক বা নার্স নেই। এটি দির্ঘদিন ধরেই অবৈধভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে এসব প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলো।
এ ব্যাপারে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনাটা কেউ আমাকে জানায়নি, আমি এখনই কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ফোন করছি এই ঘটনাটা তদন্তপূরক বারবাজারের ওই প্রাইভেট হাসপাতালটি বন্ধ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
আর কালীগঞ্জের ও প্রাইভেট হাসপাতালগুলো ২০২০ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স নবায়ন করা আছে, ২০২০ সালের পর থেকে একটা প্রতিষ্ঠান ও নবায়ন করা নেই এ ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রয়োজনে যে সমস্ত সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন করা নেই আমি সেগুলো সব বন্ধ করার ব্যবস্থা করবো বলে জানা এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।