এম আর অভি বরগুনা প্রতিনিধি : ঈদের দিনে চাঞ্চল্যকর বরগুনার কিশোর হৃদয় হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে। রায়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক ১২ জনকে ১০ বছর ও ৪ জনকে ৭ বছরের আটকাদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। এছাড়া ৩ শিশুকে এ মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বরগুনা শিশু আদালতের বিচারক ও জ্যেষ্ঠ জেলা জজ মো. মশিউর রহমান খান এ রায় ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্র পক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল। তিনি জানান, সকাল ৯ টায় বরগুনা কারাগারের সেফ হোম থেকে অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৬ জনকে আদালতে হাজির করা হয়।
এছাড়াও মামলায় জামিন নিয়ে পলাতক থাকা অপ্রাপ্তবয়স্ক ৩ জনের মধ্যে রায় ঘোষণার সময় একজন সেচ্ছায় আদালতে হাজির হন। মোট ৩ বছর ৪ মাসে ৪৪ কার্যদিবসে এ মামলার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এ ছাড়াও এ মামলায় প্রাপ্তবয়স্ক ৯ জনের বিচার বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, আজকের এই রায় একটি দৃষ্টান্তকারী রায়। এ রায়ে বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। রায়ের মাধ্যমে সারাদেশের কিশোররা বেপরোয়া হওয়া থেকে বিরত থাকতে একটি মেসেজ পাবে।
উল্লেখ্য, হৃদয় বরগুনা সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট থেকে ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেয়। ওই বছরের ২৫ মে ঈদের দিন বিকালে সে বন্ধুদের সঙ্গে পায়রা নদীর পাড়ে বল্ক ইয়ার্ডে ঘুরতে যায়। এসময় পূর্বশত্রুতার পাশাপাশি হৃদয়ের সঙ্গে থাকা এক বান্ধবীকে অভিযুক্তরা উত্ত্যক্ত করলে হৃদয় এর প্রতিবাদ করে।
এতে দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হলে অভিযুক্ত নোমান কাজী, ইউনুস কাজীসহ ২৮ জন মিলে প্রকাশ্যে হৃদয়সহ তার কয়েক বন্ধুকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং গুরুতর অবস্থায় হৃদয়কে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরের দিন হৃদয়ের মা ফিরোজা বেগম বরগুনা থানায় ২০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১৪-১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ১৯ জনকে শিশু আদালত ও ৯ জনকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে জেলা জজ আদালতে আলাদা বিচার শুরু হয়।