নিজস্ব প্রতিবেদন: ইলিশের বাধাহীন প্রজননে মধ্যরাত থেকে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত (২২ দিন) সাগর ও নদীতে সব ধরনের মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই সময়ে মাছ পরিবহন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও বাজারজাতকরণ বন্ধ থাকবে।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আশ্বিনের শেষ সময়ে গভীর সাগর থেকে উপকূলীয় অঞ্চলের নদীর মোহনায় এসে মা ইলিশ ডিম ছাড়ে। প্রজননের এ সময়কে বাধাহীন করতে ১১ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের জেল বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
বুধবার (১১ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সাগর হতে পটুয়াখালীর মহিপুর ও আলীপুরের পোতাশ্রয় খাপড়াভাঙ্গা নদীতে আসতে শুরু করেছে মাছ ধরার ট্রলার। জেলেরা জাল গুছিয়ে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউ আবার ট্রলার থেকে জাল তুলছেন সেলাই করার জন্য।
জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়ে বেশির ভাগ জেলে কর্মহীন থাকবে। কিন্তু দীর্ঘ এই সময়ে একজন জেলের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ মাত্র ২৫ কেজি চাল। সেটাও অনেক জেলে ঠিকমতো পায় না।
এছাড়া, নিষেধাজ্ঞার সময়ে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে মাছ শিকার করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেনা তারা। নিষেধাজ্ঞার সময় পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেদের আগ্রাসন বন্ধসহ প্রণোদনা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন জেলেরা।
জেলে ইউসুফ ঢালী বলেন, আমরা সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে জাল নিয়ে সাগর থেকে ফিরে এসেছি। কিন্তু এখনো সরকারি চাল পাইনি। মাছ ধরা ছাড়া আমরা অন্য কোনো কাজও জানি না। সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ২৫ কেজি চালে আমাদের কিছুই হয় না।
আলীপুরের বয়োবৃদ্ধ জেলে সোবহান ঘরামী বলেন, প্রতি বছরই আমার নিষেধাজ্ঞা মানি। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার পরে সাগরে গিয়ে আর মাছ পাই না। কারণ এ সময়ে ভারতীয় জেলেরা আমাদের দেশে ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশের কোনো জেলে যেন অমাদের জলসীমানায় না ঢুকতে পারে সেজন্য আমাদের নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড সচেষ্ট রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় সাগরে তাদের টহল অব্যাহত থাকবে। এছাড়া, জেলেরা যেসব দাবি করেছে সেগুলো আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।