নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারতের অযোধ্যায় বহুল আলোচিত রামমন্দির উদ্বোধন করছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ সোমবার সকালে এ মন্দির উদ্বোধনের উদ্দেশ্যে তিনি অযোধ্যায় যান।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, রামমন্দির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই নানা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে অংশ নেন মোদি। এরপর মন্দিরের প্রধান কক্ষে রাখা দেবতা রামের মূর্তির চোখের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। আর এর মাধ্যমে রামের ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ সম্পন্ন হয়। পুরো এ প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দেন নরেন্দ্র মোদি।
রামমন্দির উদ্বোধনের সময় নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ছিলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আবন্দীবেন প্যাটেল, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএএস) প্রধান মোহন ভাগবত প্রমুখ।
‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ হওয়ার পর ১১ দিনের উপবাস ব্রত ভাঙেন মোদি। এ সময় তাঁকে গ্লাস থেকে চামচে করে ‘চরণামৃত’ খাইয়ে উপবাস ভাঙান শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের গোবিন্দদেব গিরি মহারাজ। নরেন্দ্র মোদি রামমন্দির উদ্বোধনের আগে শরীর ও আত্মা পবিত্র করার উদ্দেশ্যে ১১ দিনের ‘উপবাস ব্রত’ পালন করছিলেন। এটি ‘কঠিন ব্রত’ নামেও পরিচিত।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রামমন্দিরের মূল চত্ত্বরেই মোদির জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। তিনি মন্দির উদ্বোধনের মূল পর্ব শেষ করে জনসভায় বক্তৃতা দেন। মোদি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘২২ জানুয়ারি শুধু কোনও তারিখ নয়, নতুন কালের শুরু। রাম আর তাঁবুতে নয়, এ বার মন্দিরে থাকবেন।’
রামমন্দির যেখানে নির্মিত হলো সেখানেই এক সময় মুসলিমদের কাছে জনপ্রিয় ‘বাবরি মসজিদ’ ছিল। ১৬ শতকে নির্মিত মসজিদটি ১৯৯২ সালে কট্টরপন্থি হিন্দু জনতা ভেঙে দিলে হিন্দু–মুসলি দাঙ্গা সৃষ্টি হয়। সেই দাঙ্গায় অন্তত ২ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিলেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, ৩৫ বছরের পুরনো সেই বিতর্ককে সামনে এনে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি এবং এর মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে ক্ষমতায়ও এসেছে দলটি।
তবে আজকের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়নি ভারতের কংগ্রেসসহ বেশির ভাগ বিরোধীদল। এমনকি হিন্দু ধর্মাবলম্বী অনেক ধর্মগুরুও এ অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। তাদের ভাষ্য, ধর্মীয় উদ্দেশ্য নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই মোদি এ মন্দির নির্মাণ করেছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, ৭০ একরের একটি কমপ্লেক্সের ৭ দশমিক ২ একর জায়গাজুড়ে রামমন্দির নির্মিত হচ্ছে। এটি হবে তিন তলাবিশিষ্ট। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ কোটি ৭০ লাখ রুপি। আজ মোদি শুধু নিচতলার উদ্বোধন করেছেন। মন্দিরের বাকি অংশের নির্মাণকাজ এ বছরের মধ্যেই শেষ করার কথা রয়েছে।