মো.নজরুল ইসলাম,গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরুর আগেই শিক্ষার্থীদের কোচিং করানো হচ্ছে। এতে ক্লাসে পাঠদানের ক্ষেত্রে অনেক শিক্ষকই অমনোযোগী হয়ে পড়ছেন।
তারা কোচিং ক্লাস শেষ করে ক্লান্ত হয়ে বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করতে প্রবেশ করেন। ফলে ক্লান্ত শরীরে তারা শ্রেণিকক্ষে মনেযোগী হতে পারেন না।
তবে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা বলছেন দুর্বল শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় উন্নতি করার জন্য সকালে কোচিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক কোচিং করতে হচ্ছে। সন্তানের কোচিং ক্লাসের জন্য বাড়তি ব্যয় বহন করতে অনেক অভিভাবক আর্থিক কষ্টে ভুগছেন।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার এ রকম একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ঝিনাশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়’। এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪শ’ জন। কোচিং করতে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নেওয়া হয় জনপ্রতি ৫শ টাকা করে। বিদ্যালয় শুরুর আগে সকালে শুরু করা হয় কোচিং ক্লাস।
স্থানীয় লোকজন বলেন, ‘স্কুল শুরুর আগেই আরেক স্কুল’।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন দরিদ্র অভিভাবক বলেন, পরীক্ষার সময় যাতে ঝামেলা না হয়, ভয়ে সন্তানকে কোচিংয়ে দিতে হয়েছে। খুব কষ্ট করে মাস শেষে কোচিংয়ের টাকা দিই।
এব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোত্তালেব বলেন, আইন মেনে বিদ্যালয়ে সকাল বেলা কোচিং করানো হয়। অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রয়েছেন যারা অসচ্ছল, তাদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়া হয় না।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. রাসেল মিয়া বলেন, বাণিজ্যিকভাবে কোচিং করানো হয় না। বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী অঙ্কসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুর্বল। তাদের উন্নতির জন্য শিক্ষকদের কোচিং করাতে বলা হয়েছে।
সদর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস.এম সাইদ হাসান বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে দুর্বল শিক্ষার্থীদের বিশেষ ক্লাস বা অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে পারে। তবে কারো কাছ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে ফি নিয়ে কোচিং করাতে পারবে না।
গাইবান্ধার জেলা শিক্ষা অফিসার (ডিইও) রোখসানা বেগমের বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, প্রত্যেক উপজেলায় শিক্ষা কমিটি রয়েছে। সেই কমিটিতে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। তাদের সাথে কথা বলতে বলেন তিনি।