নিজস্ব প্রতিবেদন:ঈদযাত্রায় সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে দূরপাল্লার যান চলাচল বেড়েছে। অন্যদিকে সড়কটিতে চলছে সাসেক-২ সড়ক সংযোগ সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ। আর শুক্রবার সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সংস্কার কাজের পাশে গর্তে পানি জমেছে। এতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন ঢাকা ও সিরাজগঞ্জ থেকে রংপুর-উত্তরাঞ্চলগামী যাত্রীরা। মহাসড়কটির গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়িতে সবচেয়ে বেশি যানজট দেখা যায়। ফলে এবারও মহাসড়কটিতে ঈদযাত্রায় পিছু ছাড়ছে না যানজট।
সূত্র জানায়, সওজের সাসেক-২ প্রকল্পের চলমান কাজের কারণে গোবিন্দগঞ্জের পান্থাপাড়া থেকে বাসস্ট্যান্ড-মায়ামনি হোটেল অভিমুখে প্রায় তিন কিলোমিটার এবং পলাশবাড়ি থানার উত্তর-দক্ষিণে প্রায় দুই কিলোমিটার অংশে যানজট রয়েছে। গত মাসে মহাসড়কের দুই পাশে উচ্ছেদ ও রাস্তা সম্প্রসারণ কাজ শুরু হয়।
জানা যায়, চালকরা সিঙ্গেল রাস্তায় হুড়োহুড়ি করে রংপুর অভিমুখে তিনটি লাইনে যানবাহন ঢুকিয়ে দেওয়ায় কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ঢাকা থেকে রংপুর যেতে গোবিন্দগঞ্জে অতিরিক্ত এক ঘণ্টা ও পলাশবাড়িতে ১৫ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় ব্যয় হচ্ছে। কোনো কোনো সময় স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ বা তিনগুণ অতিরিক্ত সময় লাগছে।
সিরাজগঞ্জ থেকে রংপুরগামী জেনিন বাসের যাত্রী সাংবাদিক হীরক গুন জানান, সিরাজগঞ্জ থেকে রংপুরগামী আমাদের বাসটি সকাল ৬টায় ছাড়ে। গোবিন্দগঞ্জের পলাশবাড়ি ছাড়া কোথায়ও যানজট বা ধীরগতি চোখে পড়েনি। পলাশবাড়িতে যেতে সাধারণত সোয়া দুই ঘণ্টার মতো সময় লাগে। কিন্তু সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় ঘণ্টাখানেক গোবিন্দগঞ্জ আটকে থাকতে হয়। আর পলাশবাড়িতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট অতিরিক্ত সময় লেগেছে। মহাসড়কের ওই দু’টি স্থানে সাসেক-২ প্রকল্পের চালু থাকায় যান চলাচলে ধীরগতি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জেনিন বাসের চালক নাজমুল ইসলাম জানান, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমে নলকা-হাটিকুমরুল দিয়ে বগুড়া হয়ে রংপুর যেতে গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ি যেতে প্রায়ই যানজট দেখা যায়। শুক্রবারও ওই দু’টি স্থানে ঘণ্টাখানেক আটকে থাকতে হয়।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলগামী যানবাহনের ব্যাপক চাপ আছে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৫ হাজার ৩২টি যানবাহন সেতু পারাপার হলেও সিরাজগঞ্জ জেলার কোথাও যানজট নেই।
সিরাজগঞ্জ হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি ওয়াদুত আলী বলেন, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা নেই। তবে গুগল ম্যাপে দেখা যাচ্ছে গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়িতে থেমে থেমে যানজট হচ্ছে।
গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, সাসেক প্রকল্পের কাজের কারণে রাস্তা সরু হয়েছে, অন্যদিকে সংস্কার কাজের পাশে গর্তে বৃষ্টির পানি জমে চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কে গাড়ির চাপ না থাকলেও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণে পান্থাপাড়া থেকে উপজেলা সদরের মায়ামনি হোটেল পর্যন্ত গাড়ির গতি ছিল ৫ থেকে ১০ কিলেমিটার। এর মধ্যে চালকদের হুড়োহুড়ির কারণে আরও জটলা বাঁধছে।
সাসেক-২ সড়ক সংযোগ সম্প্রসারণ প্রকল্পের কর্মকর্তা ড. ওয়ালিউর রহমান বলেন, গোবিন্দগঞ্জে সরকারি অধিগ্রহণের জমি বুঝে পেতে অনেক সময় লেগেছে। মে মাসে জমি বুঝে পাওয়ার পর উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। উচ্চ আদালতে আইনি জটিলতা ও জমি অধিগ্রহণের বিলম্বের কারণে গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়িতে সম্প্রসারণ কাজ করতে বিলম্ব হয়। তারপরও আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
যানজটের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, গতকালও আমি ওই দু’টি স্থান ঘুরে এসেছি। ভালোই তো দেখেছি। ওই সময় হয়তো বৃষ্টি ছিল না। আবার গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়িতে মহাসড়কের পাশে গরু ও কলারহাট বসার কারণেও যানজট বাঁধে। তারপরও খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।