এস.এম.ফেরদৌস,গাইবান্ধার প্রতিনিধি:৫ই আগষ্ট পরবর্তী দেশের ক্ষমতার পট পরিবর্তনের ফলে বিরোধী রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিনের দিনের স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়ে ছাত্র-জনতা যে বিপ্লব ঘটিয়েছে তা রাজনৈতিক দলগুলোর উপর থেকে বিশাল বোঝা সরিয়েছে।
এখন সব রাজনৈতিক দলগুলো তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে কোন বাঁধা বিপত্তি ছাড়াই। সকলেই স্বাধীন মতামত প্রচার ও প্রকাশ করছে অবলীলায়, সেক্ষেত্রে নেই মামলা হামলার ভয়।
রাজনীতির মাঠ থেকে আওয়ামী লীগ একপ্রকার বিদায় নিয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কোন নেতা কর্মীদের তৎপরতা চোখে পড়ছে না।
একারণেই অন্যান্য অনেক রাজনৈতিক দল থাকলেও মাঠের রাজনীতিতে মূল দল দুটি বিএনপি ও জামায়াত। দীর্ঘদিন থেকে বিএনপি স্বল্প পরিসরে প্রকাশ্যে কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করলেও জামায়াতে ইসলামী ছিল প্রায় নিষিদ্ধ।
কিন্তু প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের ফলে জামায়াতে ইসলামী তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম কয়েক গুণ বৃদ্ধি করেছে।
বিএনপি রাজনৈতিক কার্যক্রমে বেশ সক্রিয় হলেও মাঠ পর্যায়ে কিছু নেতা কর্মীরা দখলবাজি ও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়ে পড়েছে।
কেউ কেউ এখন থেকেই নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সমাজে বিএনপির প্রতি মানুষের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এসব তথ্য যখনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিকট পৌঁছে যাচ্ছে সাথে সাথেই ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
কিন্তু তার পরও দেশের বিভিন্ন স্থানে ঐরকম ঘটনা ঘটেই চলছে, এতে বিএনপি হাইকমান্ড সহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা বিব্রত ও চিন্তিত হচ্ছেন।
ইতিমধ্যে জনগণের মুখে চাউর হয়েছে-নৌকা ও ধানের শীষ দুই সাপের একই বীষ। একথা অনস্বীকার্য যে বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল এবং তারা ক্ষমতার খুব কাছাকাছি।
দলটি গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ লড়াই ও নির্যাতনের মধ্য দিয়ে আজকের এই অবস্থানে এসেছে। স্বার্থবাদী কিছু পরিবার রাজনীতিকে ক্ষমতা ও অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার বানিয়েছে।
দেখা যায় পরিবারের কেউ কেউ আওয়ামী লীগ করে কেউ কেউ আবার বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। এদের অধিকাংশই নেতিবাচক কর্মকান্ডে একে অপরের সহযোগি হিসেবে কাজ করে।
সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিএনপির পক্ষ থেকে দ্রুত নির্বাচন দিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপ দিচ্ছে।
অপরদিকে আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতে ইসলামীকে দীর্ঘদিন একপ্রকার সব রাজনৈতিক কার্যক্রমে বাঁধা প্রদান করে আসছিল। এমনকি সারা বাংলাদেশেই তাদের দলীয় কার্যালয় বন্ধ করা হয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে লুকিয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী নির্বিঘ্নে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ডাঃ শফিকুর রহমান যিনি জামায়াতের আমির, তিনি জনসাধারণের কাছে ব্যাপক সমাদৃত হয়ে উঠেছেন বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে।
জামায়াতে ইসলামীর নেতা কর্মীরা প্রচুর জনহিতকর কাজে সময় দিচ্ছেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে তাদের বিষয়ে সুধারণার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন বিশেষ আয়োজনে সরকারি ভাবে তাদের ডাক পড়েছে।
এছাড়াও মিডিয়া কাভারেজ ও পাচ্ছে চোখে পড়ার মতো। এরসাথে বিভিন্ন ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে ঐক্য গড়ে তোলার জন্য সচেষ্ট হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন এতে করে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী রাজনীতির দৌড়ে অনেক খানি এগিয়েছে। যদিও পূর্বের অবস্থা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে জনসমর্থনের পার্থক্য প্রায় ১৫-২০ পার্সেন্ট।
এখন দেখা যাক আগামীতে জনসমর্থনের হাওয়া কোথায় যায়!