মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ,বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার ধুনট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত এর সরকারী বাস ভবন থেকে করোনা কালীন ২০২১ সালের ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহারের’ ২২১ বস্তা খাবার অযোগ্য ত্রান সামগ্রী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীগ নেতা আব্দুল হাই খোকনের নিকট হস্তান্তর নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
সরকারের একজন পদস্থ কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সরকারী ত্রান সামগ্রী অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ না করে বাসায় রেখে নষ্ট করার ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
উপজেলা প্রশাসন জানায়, ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্তকে গত ৭ই মার্চ ধুনট উপজেলা থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলায় বদলী করা হয়। গতবৃহস্পতিবার (৬ই এপ্রিল) ধুনট উপজেলায় তার শেষ কর্ম দিবস ছিল।
ওইদিন বিকেল ৩টার দিকে উপজেলা পরিষদের সরকারী বাস ভবন থেকে ২২১ বস্তা নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার অযোগ্য ত্রান সামগ্রী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই খোকনের সরকারী বাস ভবনে জমা দেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনে সংবাদকর্মী ও রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের ভীড় জমে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চাল, ডাল, লবন, তেল, চিড়া, লুডুলস, চিনি, হলুদ, মরিচ, ধনিয়ার গুড়া মসলার সাড়ে ১৫ কেজি ওজনের বস্ত্রার গায়ে লেখা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার,ত্রান সামগ্রী হিসেবে বিনা মূল্যে বিতরনের জন্য। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রনালয় ২০২১-২০২২ অর্থ বছর ও ০৭.০৭.২০২১ তারিখ।
প্রায় দুই বছর আগের এই ত্রান সামগ্রী মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে খাবার অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই খোকন বলেন, ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত শেষ কর্মদিবসে ২২১ বস্তা ত্রান সামগ্রী শ্রমিক দিয়ে তার সরকারী বাসায় রেখেছেন এবং ২০২২ সালের ২৫ জুলাই তারিখের তৎকালিন জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক স্বাক্ষরিত একটি বরাদ্দ পত্র দিয়েছেন। রেখে দেওয়া ত্রান সামগ্রী গুলো অনেকটাই খাবার অযোগ্য।
ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, ত্রান সামগ্রী গুলো গত তিন মাস আগে বরাদ্দ পেয়েছি। সেগুলোর কিছু বিতরন করা হয়েছে । আমার বদলী জনিত কারনে ত্রান সামগ্রী গুলো উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া হয়েছে। এর চেয়ে বেশী কিছু তিনি বলতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে বগুড়া জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেছেন, ইউএনও’র বাসা নয় ওটা উপজেলা প্রশাসনের অস্থায়ী গুদাম বলে আমাকে জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (ডিআরও) জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কারো কোন অবহেলা থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।