মো.নজরুল ইসলাম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ল্যাম্পি স্কিন রোগ আক্রান্ত হয়ে গত দু’সপ্তাহে ২০টি গরুর মৃত্যু এবং কমপক্ষে ৫০০টি গরু আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও পল্লী চিকিৎসকদের নিকট হতে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের তথ্য মতে দু’সপ্তাহে মৃত্যুর সংখ্যা ৩টি এবং আক্রান্ত গরুর সংখ্য ১০০টি। ল্যাম্পি স্কিন রোগের প্রার্দুভাব ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের পক্ষ এলাকায় এলাকায় উঠান বৈঠক ছাড়া আর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। মালিক এবং খামারিরা গরু নিয়ে দুর্শ্চিতায় রয়েছেন। বিশেষ করে বাছুর গরু এই রোগে ব্যাপক হারে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে।
উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের বাদামের চর গ্রামের খামারি সুরুজ্জামান শেখ জানান, তার আট মাস বয়সি একটি বাছুরের লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে ৭ দিনের ব্যাবধানে মারা গেছে। তিনি বলেন উপজেলা শহর হতে তার বাড়ির দুরত্ব ৩৫ কিলোমিটার।
আক্রান্ত গরু নিয়ে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসে যাওয়া অসম্ভব। কিন্তু মোবাইল ফোনে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস হতে কোন পরামর্শ পাওয়া যায়নি। সে কারণে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কয়েক হাজার টাকা খরচ করেও বাছুরটিকে বাঁচানো যায়নি।
উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের খোদ্দারচর গ্রামের খামারি মাইদুল ইসলাম, শোনাভান বেগম, শফিকুল ইসলাম ও রাজু মিয়া জানান, আক্রান্ত গরুর গায়ে প্রথমে প্রচন্ড জ্বর দেখা দেয়। এরপর নাক-মুখ দিয়ে লা-লা ঝরতে থাকে।
নেয়া-খাওয়া বন্ধ করে দিয়ে গরু দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুটি গুটি হয়ে ওঠে। কয়েক দিনের মধ্যেই গুটি ফুটে ক্ষতস্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়। গরুর শরীর ফুলে যায়। এর কিছুদিন পর গরু মারা যায়। ইতিমধ্যে তাদের খামারের একটি করে গরু মারা গেছে।
উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, তার ইউনিয়নে কমপক্ষে বাছুরসহ ১০০ গরু আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস হতে এখন পর্যন্ত ভ্রামম্যান মেডিকেল টিম গঠন করে চিকিৎসা দেয়া হয়নি।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের ভেটেরিনারি ডাক্তার মোজাম্মেল হক জানান, গত দু’সপ্তাহে তিনি ল্যাস্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত ১০০ গরুর চিকিৎসা প্রদান করেছেন। এর মধ্যে হতে ৩টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। এখন র্পন্ত গোটা উপজেলার আক্রান্ত ও মৃত্যু গরুর সংখ্যা সঠিকভাবে নিরুপন করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ফজলুল করিম বলেন, লাম্পি স্কিন (এলএসডি) একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এটি দ্রæত ছড়িয়ে পড়ে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকায় উঠান বৈঠকের মাধ্যমে এই রোগ সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করে আসছে।
যে সমস্ত গরু চিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসে আনা হচ্ছে তাদের সকল প্রকার চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।