নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ছাড়া আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় এখন আর ভোটের প্রয়োজন হচ্ছে না। ফলে দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার সাহাবুদ্দিনই।
জাতীয় নির্বাচনের আগে এবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিকে সবার নজর ছিল। কে হচ্ছেন নতুন রাষ্ট্রপতি- এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পৃক্ত অনেকের নাম নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছিল। কিন্তু সব অনুমান ও জল্পনা-কল্পনা ভুল প্রমাণ করে রোববার (১২ ফেব্রুয়ার) মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী মনোনীত করেছে আওয়ামী লীগ।
আর কোনো প্রার্থী না থাকায় এখন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণার অপেক্ষা। বিধান অনুযায়ী, আগামীকাল সোমবার প্রার্থিতা বাছাইয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ বিবেচিত হলে নির্বাচন কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। এখন শুধু প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পালা।
নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, মনোনয়নপত্র দাখিলের নির্ধারিত সময় আজ রোববার বিকেল ৪টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া আর কারো মনোনয়নপত্র জমা পড়েনি। আগামীকাল সোমবার দুপুরের মধ্যে প্রার্থিতা বাছাইয়ের পর নির্বাচন কমিশন তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।
এর আগে আজ রোববার বেলা ১১টায় নির্বাচন কমিশনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি পদে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এর আগে ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার নেন মো: আবদুল হামিদ। সেই অনুযায়ী তার ৫ বছরের মেয়াদ আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হবে।
মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ব্যক্তিগত জীবনে এক পুত্রসন্তানের জনক এবং তার স্ত্রী প্রফেসর ড. রেবেকা সুলতানা সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব ছিলেন।
মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন পেশায় একজন আইনজীবী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য। তিনি ১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইতোপূর্বে জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন।
তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতা-কর্মীদের দ্বারা সংঘটিত হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠন এবং মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অনুসন্ধানে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর তিনি কারাবরণ করেন।
তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।