নিজস্ব প্রতিবেদক :কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে গৃহহীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২ হাজার রোহিঙ্গা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজারেরও বেশি বসতঘর, ক্যাম্পে পরিচালিত বিভিন্ন সংস্থার হাসপাতাল, স্কুলসহ বিভিন্ন অবকাঠামো।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে প্রাথমিকভাবে পাঁচশ ঘরবাড়ি পুড়ে যাওয়ার তথ্য জানানো হয়েছে।
আগুন লাগিয়ে দেয়া দুবৃর্ত্ত সন্দেহে এক রোহিঙ্গাকে আটক করেছে ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট এপিবিএন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আগুনের তীব্রতা আরও বাড়তে থাকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, একসময় আগুন ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের ঘরবাড়িসহ পার্শ্ববর্তী ৯, ১০ নং ক্যাম্পে, এসময় কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিটসহ স্থানীয়দের সমন্বিত প্রচেষ্টা চালিয়ে কিছু অংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও এখনো আগুনের লেহিহান শিখা দেখা যাচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার, কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা কিনা তা আমরা উড়িয়ে দিচ্ছি না। সন্দেহভাজন একজনকে ইতিমধ্যে আটক করা হয়েছে। পরিকল্পিত ঘটনা কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
রোহিঙ্গ নেতা সৈয়দউল্লাহ জানান, ‘১১, ৯, ১০ নং ক্যাম্পের ৮টি ব্লকের অসংখ্য ঘর ইতোমধ্যে পুড়ে গেছে। এই ক্যাম্পগুলোর হাজারো রোহিঙ্গাকে খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে, আগুন না কমলে এ সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়তে পারে।’
১১ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের যুবক মোহাম্মদ করিম (২৫) বলেন, ‘আমরা আশ্রয়হীন হয়ে পড়লাম, পরিবার নিয়ে চলে যাচ্ছি আত্মীয়ের বাসায়। আমার কিছু অবশিষ্ট নেই।’
এর আগে, ২০২১ সালে ২২ মার্চ একই ক্যাম্পসহ পার্শ্ববর্তী তিনটি ক্যাম্পে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। ওই সময় আগুনে দশ হাজারেরও বেশি বসতঘর পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা সদস্য গৃহহারা হয়েছিল। এছাড়া দগ্ধ হয়ে দুই শিশুসহ ১৫ জন রোহিঙ্গা মারা যায়।