বিশেষ প্রতিনিধি ঃ নেত্রকোণা জেলা বিএনপি বিগত দিনের চেয়ে এখন অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। যা নেত্রকোণা জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক অবস্থা দিনদিন তৃণমুলে শক্তিশালী ও নেতা কর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি’তে বিগত দিনে ঘাপটি মেরে থাকা আইটিসিএল লুটকারীরা আবারও সক্রিয় হচ্ছে।
২০১৯ সালের নির্বাচনের পর থেকে জাতীয় পার্টি থেকে আসা ও সংস্কার পন্থী শীর্ষ নেতারা তখন আইটিসিএল লুটের করার সময়ের পর থেকে গা ঢাকা দেয়।
এরপর ঐ নেতারা আওয়ামী লীগ ক্ষমাতায় আসার পর আওয়ামীলীগের নেতাদের সাথে ঐ সংস্কারপন্থি নেতারা আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে লিয়াঁজো করে আবার ঐ বিএনপি’র নেতারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নেওয়ার জন্য বিএনপির বিরুদ্ধে কাজ শুরু করেন এবং অদ্যাবধি পর্যন্ত সরকার দলীয় নেতাদের সাথে ব্যবসা বণিজ্য চালিয়ে আসছে।
এখন আবার ঐ সুবিধাবাদী নেতারা মনে করেছেন যে বিএনপি ক্ষমতা সামনে এসে পরবে তাই তারা আবার দুঃসময়ের রাজ পথে থাকা ঐ নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ও তথ্য দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে আসছে।
জানা যায় ২০১৯ সালে আগষ্ট মাসে নেত্রকোণা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়। নেত্রকোণা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি গঠনের পর নেত্রকোণা জেলা বিএনপি’র ইতিহাসে প্রথম প্রত্যেকটি ইউনিটে কর্মীসভা করে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
এছাড়াও ১৫টি ইউনিটের মধ্যে ৫টি ইউনিটের সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকী ১০টি ইউনিট সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। শুধু পুলিশের কাছে বারবার অনুমতি চাওয়ার পরও অনুমতি না পাওয়ায় সম্মেলন করতে বিলম্ব হচ্ছে।
এছাড়া সরকার বিরোধী বিভিন্ন কেন্দ্রীয় কর্মসূচী থাকাতে বিভিন্ন ইউনিটে সম্মেলন করতে বিঘœ গঠছে। ২০১৯ সালে আহবায়ক কমিটি দেওযার পূর্বে নেত্রকোণা জেলা বিএনপি’র সুপার ফাইভ নেতাদেরকে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে স্কাইপিতে মেটিং ডাকলে সভাপতি আশরাফ উদ্দিন খান ও সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান তাং মিটিং-এ উপস্থিত হন নাই।
তখন ঐ সুবিাধাবাদী কয়েকজন নেতা বলেছিলেন রাজনীতি থেকে তারা অবসর যেতে পারেন এবং আর রাজনীতির সাথে সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা কম এবং বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় সেই সব মিটিং-এ না যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো ২০১৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন না পেয়ে দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
তৎকালীন সময়ের জেলা বিএনপি’র সভাপতি আশরাফ উদ্দিন খান ও সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান তাং সহ জেলা বিএনপি’র বেশ কিছু শীর্ষ স্থানীয় নেতারা গা ঢাকা দেয় এবং ঐ সময়ে তারা বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে কোনো কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন নি।
তারা গোপনে সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন বলে জানা যায়। বিভিন্ন সূত্র থেকে আরো জানা যায় এই বিষয়গুলো তখনকার বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর অবহিত ছিলেন।
আর এই সব সুবিধাবাদী শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বিএনপি ক্ষমতায় থাকা কালে আশরাফ উদ্দিন খানের নেতৃত্ব এবং মিনি মিনিস্টার নামে খ্যাত সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান তাং দের সহযোগীতায় এমন কোন কাজ নেই যে তারা করে নি।
আইটিসিএল লুট থেকে শুরু করে সরকারী সম্পত্তি দখল, সরকারী গাছ কাটা, চাঁদাবাজীসহ সবই করেন। এসবই ছিল তাদের পেশা। যার কারণে ২০০২ সালে আশরাফউদ্দিন খানকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়।
১৯৭৯ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আশরাফউদ্দিন খানকে এমপি বানিয়ে ছিলেন।
পরবর্তীতে এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি’র থেকে জাতীয় পার্টিতে চলে যান এবং ১৯৮৮ সালে ভোটার বিহীন নির্বাচন করে জাতীয়পার্টি থেকে এমপি হয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে নেত্রকোণা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন।
পরবর্তীতে দল বদলকারী হিসাবে পরিচিত জনাব আশরাফ উদ্দিন খান ১৯৯৮ সালে আবার বিএনপি’তে যোগদান করেন।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় উনার ছেলে রনি খান ২০১৮ সালে যারা ধানের শীষের নির্বাচন করেছে তাদের নামের তালিকা থানা-পুলিশকে দিয়েছে।
২০০১ সালের বিএনপি ক্ষমতা আসার পর রনি খানের নেতৃত্বে চকপাড়া একটি টর্চার সেল করে কিছুকিছু আওয়ামীলীগ নেতা ও ব্যবসায়ীদের ডেকে নির্যাতন করে ও টাকা আদায়ও করেছিলেন।
এছাড়াও নেত্রকোণা জেলা বিএনপি’র সদস্য ফরিদ আহম্মেদ ফকীর বলেন, যুবদল নেতা রনি খান ২০২১ সালের পৌরনির্বাচনে প্রার্থী হন কিন্তু তিনি তার বাসা থেকে তার নির্বাচনী প্রচারনাই করতে পারেনি।
ভোট পেয়েছিলেন প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর চার ভাগের একভাগ এবং তার বিরুদ্ধে মামলা আছে চারটি। তাও আবার ২০২২ সালের পর।
জেলা কৃষকদলের সভাপতি সালাহউদ্দিন খান মিলকী বলেন, নেত্রকোণা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আনোয়ারুল হক এবং নেত্রকোণা জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী’র নেতৃত্বে আমরা সকল অঙ্গ সহযোগী সংগঠন জেলার বিএনপি’র নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছি এবং রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছি।
সকল নেতা কর্মীদের বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে আস্থাশীল এবং অনেক শক্তিশালী।
জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী বলেন, নেত্রকোণা জেলা বিএনপি পুনর্গঠনে প্রক্রিয়া বিলম্ব হওয়ার কারণ হলো করোনার কারণে দুই বছর কার্যক্রম করা যায়নি।
পুলিশ অনুমতি না পাওয়ায়, আবার অনুমতি পেলেও সরকার দলীয় লোকেরা সম্মেলন মঞ্চভাংচুর ও মঞ্চ জ্বালিয়ে দেয় এবং সরকার বিরোধী বিভিন্ন কর্মসূচী থাকায় ইউনিট সম্মেলন করতে বিলম্ব হচ্ছে।
বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের সাথে সমন্বয় করে অচিরেই ইউনিট কমিটির সম্মেলন করা হবে।
নেত্রকোণা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আনোয়ারুল হক বলেন, বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে নেত্রকোণা জেলা বিএনপি ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা অনেক উজ্জীবিত ও শক্তিশালী।
তৃণমূল থেকে শুরু করে জেলার শীর্ষ নেতাদের নামে যে মামলা-হামলা হচ্ছে তার যাবতীয় খোঁজ খবর ও মামলার জামীন ও জেলখানায় যাবতীয় ব্যবস্থা বর্তমান আহবায়ক কমিটির নেতৃত্বেই হচ্ছে।
আগামী দিনে গণতন্ত্র পূনরুদ্ধার ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা নেত্রকোণা জেলা বিএনপি’তে ঐক্যবদ্ধ আছি এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে আন্দোলন করে শেখ হাসিনার সরকারকে হঠিয়ে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।