নিজস্ব প্রতিবেদক : বাজারে শাকসবজি, আটা-ময়দা, ডাল, ভোজ্যতেলসহ একাধিক পণ্যের দাম বাড়তি। এর মধ্যে সব ধরনের মসলার দাম নতুন করে বেড়েছে।
পাশাপাশি সপ্তাহের ব্যবধানে চাল, চিনি ও গুঁড়াদুধের দাম আরেক দফা বেড়েছে। বাজারে পণ্য কিনতে এসে ক্রেতাদের যেন নাভিশ্বাস।
শুক্রবার (২৩ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার, খিলগাঁও বাজার ও নয়াবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশি ও আমদানি করা আদা বিক্রি করা হচ্ছে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত দরে, যা গত এক সপ্তাহ আগে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।
খুচরা বাজারে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ টাকা এবং প্রতি কেজি দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা দরে, যা কয়েকদিন আগেও যথেষ্ট কম ছিল।
পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। ইতোমধ্যে খুচরা বাজারে আমদানি করা আদার দাম কেজিপ্রতি ৩২০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা হয়েছে। অনেক দিন ধরেই আদা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপাশি জিরার দামও বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। প্রতি কেজি জিরা বর্তমানে প্রায় ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে মসলার দাম কমার সম্ভাবনা নেই, বরং আরও বাড়বে।
কারওয়ান বাজারে মসলার পাইকারি বিক্রেতা মো. বাবু বলেন, চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা কেজিতে। বার্মা আদা প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়। চায়না রসুন প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশি শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ইন্ডিয়ান শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৪৭০ টাকায়। ভালো মানের কাচা হলুদ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা দরে।
এই বিক্রেতা জানান, ধনিয়া প্রতি কেজি ২৪০ টাকা, জিরা ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, এলাচ ১ হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি লবঙ্গ ১ হাজার ৫০০ টাকা, দারুচিনি ৪৫০ টাকা ও তেজপাতা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দেশে বাৎসরিক মশলার চাহিদার ৬০ শতাংশই বিক্রি হয় কোরবানি ঈদকে ঘিরে। ফলে কোরবানি ঈদ যত ঘনিয়ে আসে ততই জমে উঠে মশলার বাজার। তাই টিসিবির মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ কিংবা মসলার বাজার স্বাভাবিক রাখতে কার্যকরী উদ্যোগ দেখতে চান ভোক্তারা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পণ্য কিনতে আসা জাহানারা বেগম বলেন, বাজারে এলেই অস্বস্তি লাগে। এই অল্প টাকা দিয়ে কী থেকে কী কিনব, তা ভাবতেই মাথায় হাত উঠে যাচ্ছে। চাল কিনতে এখন নাভিশ্বাস উঠছে। মশলার কথা আর কী বলব। প্রত্যেকটি পণ্যের দাম বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে খেয়ে বেঁচে থাকা বড় দায়।
তিনি বলেন, দেশে মসলার বাজার সবচেয়ে বেশি জমে ওঠে কোরবানির ঈদকে ঘিরে। তাই এ সময় সরকারের উচিত টিসিবির মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ কিংবা মসলার বাজার স্বাভাবিক রাখতে কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া।
মুদি দোকানি মো. রাসেল বলেন, পাইকারি বাজারে একটি একটি করে সব ধরনের মশলার দাম বেড়েছে। যে কারণে আমাদের সব পণ্য আনতে বেশি টাকা খরচ হচ্ছে। বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। তবে আমি বিক্রেতা হলেও দিন শেষে আমিও তো ক্রেতা। আমারও কোনো না কোনো পণ্য বেশি দরেই কিনতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুর শাহরিয়ার জানিয়েছেন, সারা বছর মসলার বাজার স্থিতিশীল ছিল, এখন যখন ঈদ ঘনিয়ে এলো, ব্যবসায়ীরা মোচড় দিয়ে উঠেছেন। ঈদের আগে কেউ কেউ বাজারে কারসাজি করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত রয়েছেন। তবে কোরবানি ঈদে যেন বাজার স্থিতিশীল থাকে, সেজন্য সর্বোচ্চ কঠোরতা অবলম্বন করা হবে।