নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে থেকে সর্বদা তার হাতকে শক্তিশালী করেছেন বঙ্গমাতা। বঙ্গবন্ধুকে সকল আন্দোলন সংগ্রামে প্রেরণা যুগিয়েছেন তিনি। বঙ্গমাতার কারণেই প্রতিটি ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর সাফল্য লাভ সহজ হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন এবং ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক-২০২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
নানা-উতরাইয়ের পরও বঙ্গমাতা কখনো ভেঙে পড়েননি এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, বাবার রাজনৈতিক চড়াই-উতরাই ও জেল-জুলুম এবং সংকটেও ভেঙে পড়েননি তিনি। এ নিয়ে কোনো অভিযোগ ছিল না তার। বাবার পাশে থেকে সবসময় সহযোগিতা করেছেন। এমনকি অর্থনৈতিক সহযোগিতাও করেছেন বাবাকে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, মা বাবাকে বলতেন রাজনীতি করো আপত্তি নেই, কিন্তু পড়াশোনা করো। জেলজীবনেও তিনি বলতেন, জেলে থাকো আপত্তি নেই, কিন্তু স্বাস্থ্যের খেয়াল রেখ। ’
তিনি বলেন, ‘বাবার সংগ্রামের ভেতরে ছিল দেশের স্বাধীনতা। এটা পৃথিবীর কেউ না জানুক, মা কিন্তু জানতেন। কারণ, আব্বা মার সঙ্গে সব সময় কথাগুলো বলতেন। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মাকেও পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। মামলায় মাকে জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। একটা পর্যায়ে পাকিস্তানের কিছু নেতা ও আওয়ামী লীগের কিছু নেতা আসেন ৬ দফার পরিবর্তে ৮ দফার প্রস্তাব নিয়ে। আমার মায়ের অদ্ভুত স্মরণশক্তি ছিল। তিনি শুনতে এবং জেলখানায় গিয়ে আব্বার কাছে সেই কথাগুলো বলতেন। আব্বা যে নিদের্শনা দিতেন সেটা নেতাকর্মীদের কাছে পৌঁছে দিতেন। ’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আইয়ুব খান আব্বাকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে আলোচনা করার কথা বলে। আমার মা সেখানেও বলেন, প্যারোলে না। আইয়ুব খান মামলা প্রত্যাহার করবে। সবাইকে ছেড়ে দেবে। মুক্ত মানুষ হিসেবে যাবে। যখন আব্বা প্যারোলে গেলেন না, আমাদের নেতারা বাড়িতে এসে বললেন, আপনি জানেন? তারা (পাকিস্তানিরা) তো মেরে ফেলবে, আপনি তো বিধবা হবেন। তখন মা বলেছিলেন, আরও তো নেতা আছে, তাদের স্ত্রীরাও বিধবা হবে। আমি একা সধবা থাকার চেষ্টা করব তাদের বাদ দিয়ে? আপনারা একটু চিন্তা করেন, কত দৃঢ় মনোবল ছিল আমার মায়ের। ’
অনুষ্ঠানে চার বিশিষ্ট নারী ও জাতীয় নারী ফুটবল দলকে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবপদক-২০২৩’ দেওয়া হয়।
চার যে বিশিষ্ট ব্যক্তি এই পদক পেয়েছেন তারা হলেন- রাজনীতিতে সাহারা খাতুন (মরণোত্তর), শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে অণিমা মুক্তি গমেজ ও মোছা. নাছিমা জামান ববি, গবেষণায় ড. সেঁজুতি সাহা।
প্রতি বছর আটটি ক্ষেত্রে নারীদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সর্বোচ্চ পাঁচজনকে জাতীয় পদক ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব’ পদক দেওয়া হয়।