রবিউল ইসলাম, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় সনাতন ধর্মের অনুসারী হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাৎসবকে ঘিরে সর্বত্রই সাজ সাজ রব। উপজেলাটির ১১ ইউনিয়নে এবার ৯৯টি পূঁজামন্ডপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুর্গাৎসব। এসব মন্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ; এখন চলছে প্রতিমায় রংতুলির আঁচড় দেওয়ার কাজ। প্রতিমা তৈরির কাজে নিয়োজিত শিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, কিছু মন্ডপে সিসি ক্যামেরা থাকলেও অধিকাংশ পূজা মন্ডপে নেই সিসি ক্যামেরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। দুর্গাপূঁজাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ ও শিশুদের বিভিন্ন বস্ত্র-বিতানে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে কালীগঞ্জ, বারবাজার, কোলাবাজার গাজীরবাজারসহ ছোট বড় বিভিন্ন বাজারে, ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। উৎসবের আমেজে দেখা যায় ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে। বিশেষ করে নলডাঙ্গা পূঁজা মন্ডবে দেবী দুর্গাকে বরণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি লক্ষ করা যায় ।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বাবু উজ্জ্বল কুমার অধিকারী জানান, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার কালীগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি পূঁজামন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে দিবেন বলে জানিয়েছেন। আগামী ২০ অক্টোবর শারদকালে মহালয়ার তিথিতে পুরোহিতের বেদমন্ত্র উচ্চারণ, ঘণ্টা, শঙ্খধ্বনি, মায়েদের উলুধ্বনি আর ঢাকের তালে এই বিশ্ব ধরণিতে ঘোটকে চড়ে নেমে আসছেন মহামায়া দশভুজা শ্রীশ্রী দুর্গা মাতা। ২৪ অক্টোবর সবাইকে কাঁদিয়ে মাতা ফিরে যাবেন তার নিজ ভূমে।
এ বছর দুর্গাপূঁজা যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে উদযাপন করতে পারেন এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ বিভিন্ন প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান বলেন, কোনো অপ্রীতকর ঘটনা যাতে না ঘটে এজন্য উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবশ্যই সদা সচেষ্ট থাকবেন। আনসার, পুলিশ মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি পূঁজামন্ডপ সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। টিআর এর চাউল পৌছে দেওয়া হচ্ছে। সার্বক্ষনিক পুলিশ টহলে থাকবে। যুগ যুগ ধরে চলমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যাতে বজায় থাকে এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন ও দায়িত্ববান হতে হবে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, মাদক পরিহার করতে হবে। ধর্মীও ভাব বজায় রেখে সুন্দর পরিবেশে দুর্গাপূঁজা যাতে অনুষ্ঠিত হয় সেই বিষয়ে সবাইকে সজাগ দৃষ্ঠি রাখতে হবে। কোনো রকমের বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে আমরা নিজেদের উদ্যোগে পূঁজামন্ডপ গুলিতে সিসি ক্যামেরার আওতায় এনেছি। মাননীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার প্রতিটি পূঁজামন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন।
আমরা প্রত্যেক জায়গায় সেচ্ছাসেবক কমিটি করে দিয়েছি প্রত্যেক জায়গায় রেজিষ্টার মেন্টেন করা হচ্ছে যে যখন আসা যাওয়া করবে তার নাম লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। প্রত্যেকটি ইউনিয়নের বিট অফিসার সব সময় টহলে থাকবেন। আমরা চেষ্টা করছি যাতে সুন্দর ভাবে সবজায়গায় পূঁজা অনুষ্ঠিত হয়। পূঁজামন্ডপ গুলিতে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে সাধারণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। সাধারণ পূঁজামন্ডপ গুলিতে ৪জন, ঝূঁকিপূর্ণ পূঁজামন্ডপ গুলিতে ৬ জন ও অধিক ঝূঁকিপূর্ণ পূঁজামন্ডপ গুলিতে ৮ জন করে আনসার সদস্য সার্বক্ষনিক ডিউটিতে থাকবেন। পুরুষ মহিলা মিলে মোট ৫শ ৭৮ জন আনসার সদস্য কাজ করবে।